বুখারী আযান অধ্যায় ৩য় ভাগ হাদিস নং ৭৪১ – ৮০৫
১০/৮৮. অধ্যায়ঃ
সালাতে খুশু’ (বিনয়, নম্রতা, একাগ্রতা, নিষ্ঠা ও তন্ময়তা) ।
৭৪১
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ هَلْ تَرَوْنَ قِبْلَتِي هَا هُنَا وَاللَّهِ مَا يَخْفَى عَلَىَّ رُكُوعُكُمْ وَلاَ خُشُوعُكُمْ، وَإِنِّي لأَرَاكُمْ وَرَاءَ ظَهْرِي ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কি মনে কর যে, আমার কিবলা শুধুমাত্র এদিকে? আল্লাহ্র শপথ, তোমাদের রুকু’ তোমাদের খুশু’ কোন কিছুই আমার নিকট গোপন থাকে না। আর নিঃসন্দেহে আমি তোমাদের দেখি আমার পিছন দিক হতেও।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৪২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ أَقِيمُوا الرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ، فَوَاللَّهِ إِنِّي لأَرَاكُمْ مِنْ بَعْدِي ـ وَرُبَّمَا قَالَ مِنْ بَعْدِ ظَهْرِي ـ إِذَا رَكَعْتُمْ وَسَجَدْتُمْ ”.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা রুকু’ ও সিজদাগুলোতে যথাযথভাবে আদায় করবে। আল্লাহ্র শপথ! আমি আমার পিছন হতে বা রাবী বলেন, আমার পিঠের পিছনে হতে তোমাদের দেখতে পাই, যখন তোমরা রুকু’ ও সিজদা কর।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/৮৯. অধ্যায়ঃ
তাকবীরে তাহরীমার পরে কি পড়বে ।
৭৪৩
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ كَانُوا يَفْتَتِحُونَ الصَّلاَةَ بِ ـ {الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ}
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বকর (রাঃ) এবং ‘উমর (রাঃ) –’الحَمدُ لِلَّهِ رَبِّ العالَمينَ ‘ দিয়ে সালাত শুরু করতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৪৪
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عُمَارَةُ بْنُ الْقَعْقَاعِ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو زُرْعَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسْكُتُ بَيْنَ التَّكْبِيرِ وَبَيْنَ الْقِرَاءَةِ إِسْكَاتَةً ـ قَالَ أَحْسِبُهُ قَالَ هُنَيَّةً ـ فَقُلْتُ بابي وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِسْكَاتُكَ بَيْنَ التَّكْبِيرِ وَالْقِرَاءَةِ مَا تَقُولُ قَالَ “ أَقُولُ اللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَاىَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ، اللَّهُمَّ نَقِّنِي مِنَ الْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ، اللَّهُمَّ اغْسِلْ خَطَايَاىَ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাক্বীরে তাহ্রীমা ও কিরাআতের মধ্যে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকতেন। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার পিতামাতা আপনার উপর কুরবান হোক, তাকবীর ও কিরাআত এর মধ্যে চুপ থাকার সময় আপনি কি পাঠ করে থাকেন? তিনি বললেনঃ এ সময় আমি বলি- “হে আল্লাহ্! আমার এবং আমার গুনাহের মধ্যে এমন ব্যবধান করে দাও যেমন ব্যবধান করেছ পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ্ আমাকে আমার গুনাহ হতে এমনভাবে পবিত্র কর যেমন সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার হয়। হে আল্লাহ্ আমার গোনাহকে বরফ, পানি ও শিশির দ্বারা ধৌত করে দাও।”
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/৯০. অধ্যায়ঃ
১০/৯০. অধ্যায়ঃ
৭৪৫
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، قَالَ أَخْبَرَنَا نَافِعُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى صَلاَةَ الْكُسُوفِ، فَقَامَ فَأَطَالَ الْقِيَامَ، ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ الرُّكُوعَ، ثُمَّ قَامَ فَأَطَالَ الْقِيَامَ، ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ الرُّكُوعَ ثُمَّ رَفَعَ، ثُمَّ سَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُودَ، ثُمَّ رَفَعَ، ثُمَّ سَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُودَ، ثُمَّ قَامَ فَأَطَالَ الْقِيَامَ ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ الرُّكُوعَ ثُمَّ رَفَعَ فَأَطَالَ الْقِيَامَ ثُمَّ رَكَعَ فَأَطَالَ الرُّكُوعَ ثُمَّ رَفَعَ فَسَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُودَ، ثُمَّ رَفَعَ، ثُمَّ سَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُودَ ثُمَّ انْصَرَفَ فَقَالَ ” قَدْ دَنَتْ مِنِّي الْجَنَّةُ حَتَّى لَوِ اجْتَرَأْتُ عَلَيْهَا لَجِئْتُكُمْ بِقِطَافٍ مِنْ قِطَافِهَا، وَدَنَتْ مِنِّي النَّارُ حَتَّى قُلْتُ أَىْ رَبِّ وَأَنَا مَعَهُمْ فَإِذَا امْرَأَةٌ ـ حَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ ـ تَخْدِشُهَا هِرَّةٌ قُلْتُ مَا شَأْنُ هَذِهِ قَالُوا حَبَسَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ جُوعًا، لاَ أَطْعَمَتْهَا، وَلاَ أَرْسَلَتْهَا تَأْكُلُ ”. قَالَ نَافِعٌ حَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ ” مِنْ خَشِيشِ أَوْ خُشَاشِ الأَرْضِ ”.
আসমা বিন্ত আবু বক্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার সালাতুল কুসূফ (সূর্য গ্রহণের সালাত) আদায় করলেন। তিনি সালাতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর রুকু’তে গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ থাকলেন। অতঃপর দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর আবার রুকু’তে গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ রুকু’তে থাকলেন। অতঃপর উঠলেন, পরে সিজদায় গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ সিজদায় রইলেন। আবার সিজদায় গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ সিজদায় থাকলেন। অতঃপর আবার দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। আবার রুকু’তে গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ রুকু’তে থাকলেন। অতঃপর রুকু’ হতে উঠে আবার দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন এবং আবার রুকু’তে থাকলেন। অতঃপর রুকু’ হতে উঠে আবার দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন এবং আবার রুকু’তে গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ থাকলেন। অতঃপর রুকু’ হতে উঠে সিজদায় গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ সিজদায় থাকলেন। অতঃপর উঠে সিজদায় গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ সিজদায় থাকলেন। অতঃপর সালাত শেষ করে ফিরে বললেনঃ জান্নাত আমার খুবই নিকটে এসে গিয়েছিল এমনকি আমি যদি চেষ্টা করতাম তাহলে জান্নাতের একগুচ্ছ আঙ্গুর তোমাদের এনে দিতে পারতাম। আর জাহান্নামও আমার একেবারে নিকটবর্তী এসে গিয়েছিল। এমনকি আমি বলে উঠলাম, ইয়া রব! আমিও কি তাদের সাথে? আমি একজন স্ত্রীলোককে দেখতে পেলাম। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমার মনে হয়, তিনি বলেছিলেন, একটি বিড়াল তাকে খামচাচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ স্ত্রী লোকটির এমন অবস্থা কেন? মালাকগণ (ফেরেশতাগণ) জবাব দিলেন, সে একটি বিড়ালকে আটকিয়ে রেখেছিল, ফলে বিড়ালটি অনাহারে মারা যায়। উক্ত স্ত্রী লোকটি তাকে খেতেও দেয়নি এবং তাকে ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে আহার করতে পারে। নাফি’ (রহঃ) বলেন, আমার মনে হয়, ইব্নু আবূ মুলায়কাহ (রাঃ) বর্ণনা করেছিলেন, যাতে সে যমীনের পোকামাকড় খেতে পারে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/৯১. অধ্যায়ঃ
সালাতে ইমামের দিকে তাকানো ।
‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতে কুসূফ বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেছেন, তোমরা যখন আমাকে পিছিয়ে আসতে দেখেছিলে তখন আমি জাহান্নাম দেখেছিলাম; তার এক অংশ অপর অংশকে বিচূর্ণ করছে ।
৭৪৬
حَدَّثَنَا مُوسَى، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، قَالَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ قُلْنَا لِخَ باب أَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ قَالَ نَعَمْ. قُلْنَا بِمَ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ ذَاكَ قَالَ بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ.
আবূ মা’মার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা খাব্বাব (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি যুহর ও ‘আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা কিভাবে বুঝতে পারতেন? তিনি বললেন, তাঁর দাড়ির নড়াচড়া দেখে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৪৭
حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَنْبَأَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ يَزِيدَ، يَخْطُبُ قَالَ حَدَّثَنَا الْبَرَاءُ، وَكَانَ، غَيْرَ كَذُوبٍ أَنَّهُمْ كَانُوا إِذَا صَلَّوْا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَرَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ قَامُوا قِيَامًا حَتَّى يَرَوْنَهُ قَدْ سَجَدَ.
বারা‘আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁরা যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করতেন, তখন রুকু’ হতে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দেখতেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সিজদায় গেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৪৮
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما قَالَ خَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى، قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ، رَأَيْنَاكَ تَنَاوَلُ شَيْئًا فِي مَقَامِكَ، ثُمَّ رَأَيْنَاكَ تَكَعْكَعْتَ. قَالَ “ إِنِّي أُرِيتُ الْجَنَّةَ، فَتَنَاوَلْتُ مِنْهَا عُنْقُودًا، وَلَوْ أَخَذْتُهُ لأَكَلْتُمْ مِنْهُ مَا بَقِيَتِ الدُّنْيَا ”.
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে একবার সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। তখন তিনি এজন্য সালাত আদায় করেন। সাহাবা-ই-কিরাম (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! সালাতে দাঁড়ানো অবস্থায় আপনাকে দেখলাম যেন কিছু একটা ধরতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু পরে দেখলাম, আবার পিছিয়ে এলেন। তিনি বললেন, আমাকে জান্নাত দেখানো হয় এবং তারই একটি আঙ্গুরের ছড়া নিতে যাচ্ছিলাম। আমি যদি তা নিয়ে আসতাম, তাহলে দুনিয়া স্থায়ী থাকা পর্যন্ত তোমরা তা হতে খেতে পারতে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৪৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ، قَالَ حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ، قَالَ حَدَّثَنَا هِلاَلُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ صَلَّى لَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ رَقَا الْمِنْبَرَ، فَأَشَارَ بِيَدَيْهِ قِبَلَ قِبْلَةِ الْمَسْجِدِ ثُمَّ قَالَ “ لَقَدْ رَأَيْتُ الآنَ مُنْذُ صَلَّيْتُ لَكُمُ الصَّلاَةَ الْجَنَّةَ وَالنَّارَ مُمَثَّلَتَيْنِ فِي قِبْلَةِ هَذَا الْجِدَارِ، فَلَمْ أَرَ كَالْيَوْمِ فِي الْخَيْرِ وَالشَّرِّ ” ثَلاَثًا.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর তিনি মিম্বরে আরোহণ করলেন এবং মসজিদের কিব্লার দিকে ইশারা করে বললেন, এইমাত্র আমি যখন তোমাদের নিয়ে সালাত আদায় করছিলাম তখন এ দেওয়ালের সামনের দিকে আমি জান্নাত ও জাহান্নামের প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলাম। আজকের মতো এত ভাল ও মন্দ আমি আর দেখিনি, একথা তিনি তিনবার বললেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/৯২. অধ্যায়ঃ
সালাতে আসমানের দিকে চোখ তুলে তাকানো।
৭৫০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، حَدَّثَهُمْ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” مَا بَالُ أَقْوَامٍ يَرْفَعُونَ أَبْصَارَهُمْ إِلَى السَّمَاءِ فِي صَلاَتِهِمْ ”. فَاشْتَدَّ قَوْلُهُ فِي ذَلِكَ حَتَّى قَالَ ” لَيَنْتَهُنَّ عَنْ ذَلِكَ أَوْ لَتُخْطَفَنَّ أَبْصَارُهُمْ ”.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লোকদের কী হলো যে, তারা সালাতে আকাশের দিকে চোখ তুলে তাকায়? এ ব্যাপারে তিনি কঠোর বক্তব্য রাখলেন; এমনকি তিনি বললেনঃ যেন তারা অবশ্যই এ হতে বিরত থাকে, অন্যথায় অবশ্যই তাদের দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেয়া হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/৯৩. অধ্যায়ঃ
সালাতে এদিক ওদিক তাকান ।
৭৫১
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنَا أَشْعَثُ بْنُ سُلَيْمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الاِلْتِفَاتِ فِي الصَّلاَةِ فَقَالَ “ هُوَ اخْتِلاَسٌ يَخْتَلِسُهُ الشَّيْطَانُ مِنْ صَلاَةِ الْعَبْدِ ”.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাতে এদিক ওদিক তাকানো সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ এটা একধরনের ছিনতাই, যার মাধ্যমে শয়তান বান্দার সালাত হতে অংশ বিশেষ অংশ ছিনিয়ে নেয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى فِي خَمِيصَةٍ لَهَا أَعْلاَمٌ فَقَالَ “ شَغَلَتْنِي أَعْلاَمُ هَذِهِ، اذْهَبُوا بِهَا إِلَى أَبِي جَهْمٍ وَأْتُونِي بِأَنْبِجَانِيَّةٍ ”.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি নক্শা করা চাদর পরে সালাত আদায় করলেন। সালাতের পরে তিনি বললেনঃ এ চাদরের কারুকার্য আমার মনকে আকর্ষিত করেছিল। এটি আবূ জাহমের নিকট নিয়ে যাও এবং এর বদলে একটি ‘আম্বজানিয়্যাহ’ (নকশা ছাড়া মোটা কাপড়) নিয়ে এসো।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/৯৪. অধ্যায়ঃ
সালাতের মধ্যে কোন কিছু ঘটলে বা কোন কিছু দেখলে বা ক্বিব্লাহর দিকে থুথু দেখলে, সে দিকে তাকান ।
সাহ্ল (রহঃ) বলেছেন, আবূ বক্র (রাঃ) তাকালেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখলেন ।
৭৫৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ قَالَ رَأَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم نُخَامَةً فِي قِبْلَةِ الْمَسْجِدِ، وَهْوَ يُصَلِّي بَيْنَ يَدَىِ النَّاسِ، فَحَتَّهَا ثُمَّ قَالَ حِينَ انْصَرَفَ “ إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا كَانَ فِي الصَّلاَةِ فَإِنَّ اللَّهَ قِبَلَ وَجْهِهِ، فَلاَ يَتَنَخَّمَنَّ أَحَدٌ قِبَلَ وَجْهِهِ فِي الصَّلاَةِ ”. رَوَاهُ مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ وَابْنُ أَبِي رَوَّادٍ عَنْ نَافِعٍ.
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন, এমতাবস্থায় মসজিদে কিব্লার দিকে থুথু দেখতে পেয়ে তা পরিষ্কার করে ফেললেন। অতঃপর তিনি সালাত শেষ করে বললেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাতে থাকে, তখন আল্লাহ্ তার সামনে থাকেন। কাজেই সালাতে থাকা অবস্থায় কেউ সামনের দিকে থুথু ফেলবে না। মূসা ইব্নু ‘উক্বাহ ও ইব্নু আবূ রাওয়াদও (রহঃ) নাফি’ (রহঃ) হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا لَيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَنَسٌ، قَالَ بَيْنَمَا الْمُسْلِمُونَ فِي صَلاَةِ الْفَجْرِ لَمْ يَفْجَأْهُمْ إِلاَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَشَفَ سِتْرَ حُجْرَةِ عَائِشَةَ فَنَظَرَ إِلَيْهِمْ وَهُمْ صُفُوفٌ، فَتَبَسَّمَ يَضْحَكُ، وَنَكَصَ أَبُو بَكْرٍ رضى الله عنه عَلَى عَقِبَيْهِ لِيَصِلَ لَهُ الصَّفَّ فَظَنَّ أَنَّهُ يُرِيدُ الْخُرُوجَ، وَهَمَّ الْمُسْلِمُونَ أَنْ يَفْتَتِنُوا فِي صَلاَتِهِمْ، فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ أَتِمُّوا صَلاَتَكُمْ، فَأَرْخَى السِّتْرَ، وَتُوُفِّيَ مِنْ آخِرِ ذَلِكَ الْيَوْمِ.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বললেন, মুসলমানগণ ফজরের সালাতে রত এ সময় আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশা (রাঃ)-এর হুজরার পর্দা উঠালে তাঁরা চমকে উঠলেন। তিনি তাদের দিকে তাঁকিয়ে দেখলেন, তাঁরা কাতারবদ্ধ হয়ে আছেন। তা দেখে তিনি মুচকি হাসলেন। আবূ বকর (রাঃ) তাঁর ইমামতের স্থান ছেড়ে দিয়ে কাতারে শামিল হবার জন্য পিছিয়ে আসতে চাইলেন। তিনি মনে করেছিলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হতে চান। মুসলিমগণও সালাত ছেড়ে দিতে উদ্যত হয়েছিলেন। তিনি ইঙ্গিতে তাঁদের বললেন, তোমরা তোমাদের সালাত পুরো কর। অতঃপর তিনি পর্দা ফেলে দিলেন। এ দিনেরই শেষে তাঁর ওফাত হয়। [১]
[১] অর্থাৎ তাঁর ইন্তিকালের বিষয়টি শেষ প্রহরে সকলের নিকট সুনিশ্চিতভাবে প্রতীয়মান হয় । কেননা , ঐতি-হাসিকগণ এ ব্যাপারে একমত যে , রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দিনের প্রথম প্রহরে ইন্তিকাল করেছেন । তাই এ হাদীসের ব্যাখ্যা এভাবেই করা যায় ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/৯৫. অধ্যায়ঃ
সব সালাতেই ইমাম ও মুক্তাদীর কিরাআত পড়া জরুরী, মুকীম অবস্থায় হোক বা সফরে, সশব্দে কিরাআতের সালাত হোক বা নিঃশব্দে সব সালাতেই ইমাম ও মুক্তাদীর কিরাআত পড়া জরুরী
৭৫৫
حَدَّثَنَا مُوسَى، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عُمَيْرٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ شَكَا أَهْلُ الْكُوفَةِ سَعْدًا إِلَى عُمَرَ ـ رضى الله عنه ـ فَعَزَلَهُ وَاسْتَعْمَلَ عَلَيْهِمْ عَمَّارًا، فَشَكَوْا حَتَّى ذَكَرُوا أَنَّهُ لاَ يُحْسِنُ يُصَلِّي، فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ فَقَالَ يَا أَبَا إِسْحَاقَ إِنَّ هَؤُلاَءِ يَزْعُمُونَ أَنَّكَ لاَ تُحْسِنُ تُصَلِّي قَالَ أَبُو إِسْحَاقَ أَمَّا أَنَا وَاللَّهِ فَإِنِّي كُنْتُ أُصَلِّي بِهِمْ صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَخْرِمُ عَنْهَا، أُصَلِّي صَلاَةَ الْعِشَاءِ فَأَرْكُدُ فِي الأُولَيَيْنِ وَأُخِفُّ فِي الأُخْرَيَيْنِ. قَالَ ذَاكَ الظَّنُّ بِكَ يَا أَبَا إِسْحَاقَ. فَأَرْسَلَ مَعَهُ رَجُلاً أَوْ رِجَالاً إِلَى الْكُوفَةِ، فَسَأَلَ عَنْهُ أَهْلَ الْكُوفَةِ، وَلَمْ يَدَعْ مَسْجِدًا إِلاَّ سَأَلَ عَنْهُ، وَيُثْنُونَ مَعْرُوفًا، حَتَّى دَخَلَ مَسْجِدًا لِبَنِي عَبْسٍ، فَقَامَ رَجُلٌ مِنْهُمْ يُقَالُ لَهُ أُسَامَةُ بْنُ قَتَادَةَ يُكْنَى أَبَا سَعْدَةَ قَالَ أَمَّا إِذْ نَشَدْتَنَا فَإِنَّ سَعْدًا كَانَ لاَ يَسِيرُ بِالسَّرِيَّةِ، وَلاَ يَقْسِمُ بِالسَّوِيَّةِ، وَلاَ يَعْدِلُ فِي الْقَضِيَّةِ. قَالَ سَعْدٌ أَمَا وَاللَّهِ لأَدْعُوَنَّ بِثَلاَثٍ، اللَّهُمَّ إِنْ كَانَ عَبْدُكَ هَذَا كَاذِبًا، قَامَ رِيَاءً وَسُمْعَةً فَأَطِلْ عُمْرَهُ، وَأَطِلْ فَقْرَهُ، وَعَرِّضْهُ بِالْفِتَنِ، وَكَانَ بَعْدُ إِذَا سُئِلَ يَقُولُ شَيْخٌ كَبِيرٌ مَفْتُونٌ، أَصَابَتْنِي دَعْوَةُ سَعْدٍ. قَالَ عَبْدُ الْمَلِكِ فَأَنَا رَأَيْتُهُ بَعْدُ قَدْ سَقَطَ حَاجِبَاهُ عَلَى عَيْنَيْهِ مِنَ الْكِبَرِ، وَإِنَّهُ لَيَتَعَرَّضُ لِلْجَوَارِي فِي الطُّرُقِ يَغْمِزُهُنَّ.
জাবির ইব্নু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কূফাবাসীরা সা’দ (রাঃ)-এর [১] বিরুদ্ধে ‘উমর (রাঃ)-এর নিকট অভিযোগ করলে তিনি তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন এবং আম্মার (রাঃ)-কে তাদের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। কূফার লোকেরা সা’দ (রাঃ)-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়ে এ-ও বলে যে, তিনি ভালরূপে সালাত আদায় করতে পারেন না। ‘উমর (রাঃ) তাঁকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন, হে আবূ ইসহাক! তারা আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, আপনি নাকি ভালরূপে সালাত আদায় করতে পারেন না। সা’দ (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্র শপথ! আমি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের অনুরূপই সালাত আদায় করে থাকি। তাতে কোন ত্রুটি করি না। আমি ‘ইশার সালাত আদায় করতে প্রথমে দু’ রাকাআত একটু দীর্ঘ ও শেষের দু’ রাকা‘আত সংক্ষেপ করতাম। ‘উমর (রাঃ) বললেন, হে আবূ ইসহাক! আপনার সম্পর্কে আমার এ-ই ধারণা। অতঃপর ‘উমর (রাঃ) কূফার অধিবাসীদের এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক বা একাধিক ব্যক্তিকে সা’দ (রাঃ) এর সঙ্গে কূফায় পাঠান। সে ব্যক্তি প্রতিটি মসজিদে গিয়ে সা’দ (রাঃ) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো এবং তাঁরা সকলেই তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করলেন। অবশেষে সে ব্যক্তি বনূ আব্স গোত্রের মসজিদে উপস্থিত হয়। এখানে উসামা উব্নু কাতাদা নামে এক ব্যক্তি যাকে আবূ সা’দাহ্ ডাকা হত– দাঁড়িয়ে বলল, যেহেতু তুমি আল্লাহ্র নামে শপথ দিয়ে জিজ্ঞেস করেছ, সা’দ (রাঃ) কখনো সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে যান না, গানীমাতের মাল সমভাবে বন্টন করেন না এবং বিচারে ইনসাফ করেন না। তখন সা’দ (রাঃ) বললেন, মনে রেখো, আল্লাহ্র কসম! আমি তিনটি দু’আ করছিঃ হে আল্লাহ্! যদি তোমার এ বান্দা মিথ্যাবাদী হয়, লোক দেখানো এবং অপপ্রচারের জন্য দাঁড়িয়ে থাকে তাহলে– ১. তার হায়াত বাড়িয়ে দিন, ২. তার অভাব বাড়িয়ে দিন, এবং ৩. তাঁকে ফিত্নার সম্মুখীন করুন। পরবর্তীকালে লোকটিকে (তার অবস্থা সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করা হলে সে বলতো, আমি বয়সে বৃদ্ধ, ফিত্নায় লিপ্ত। সা’দ (রাঃ) এর দু’আ আমার উপর লেগে আছে। বর্ণনাকারী আবদুল মালিক (রহঃ) বলেন, পরে আমি সে লোকটিকে দেখেছি, অতি বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে তার ভ্রু চোখের উপর ঝুলে গেছে এবং সে পথে মেয়েদের বিরক্ত করত এবং তাদের চিমটি দিত।
[১] তিনি তখন কূফায় আমীর হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৬
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ الرَّبِيعِ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ صَلاَةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ ”.
‘উবাদাহ ইব্নু সমিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সালাতে সূরা আল-ফাতিহা পড়ল না তার সালাত হলো না। [১]
[১] আমাদের দেশের হানাফী ভাইয়েরা ইমামের পেছনে সূরা আল-ফাতিহা পাঠ করেন না, এটা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ‘আমলের বিপরীত। ইমামের পিছনে মুক্তাদীকে অবশ্যই সূরা আল-ফাতিহা পাঠ করতে হবে। মুক্তাদী ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা না পড়লে তার সালাত, সালাত বলে গণ্য হবে না ।
বুখারীর অন্য বর্ণনায় জুযউল ক্বিরাআতের মধ্যে আছে- ‘আমর্ বিন শুয়াইব তাঁর পিতা হতে, তাঁর পিতা তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করে বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন তোমরা কি আমার পেছনে কিছু পড়ে থাক? তাঁরা বললেন, হাঁ আমরা খুব তাড়াহুড়া করে পাঠ করে থাকি। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন তোমরা উম্মুল কুরআন অর্থাৎ সূরা ফাতিহা ব্যতিত কিছুই পড়বে না। (বুখারী ১ম ১০৪ পৃষ্ঠা। জুযউল কিরায়াত। মুসলিম ১৬৯, ১৭০ পৃষ্ঠা। আবূ দাউদ ১০১ পৃষ্ঠা। তিরমিযী ১ম খণ্ড ৫৭, ৭১ পৃষ্ঠা। নাসাঈ ১৪৬ পৃষ্ঠা। ইব্নু মাজাহ ৬১ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ৯৫ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মালিক ১০৬ পৃষ্ঠা। সহীহ ইব্নু খুযায়মাহ ১ম খণ্ড ২৪৭ পৃষ্ঠা। মুসলিম ইসলামিক ফাউন্ডেশন হাদীস নং ৭৫৮-৭৬৭ ও ৮২০-৮২৪। হাদীস শরীফ, মাওঃ আবদুর রহীম, ২য় খণ্ড ১৯৩-১৯৬ পৃষ্ঠা, ইসলামিয়াত বি-এ, হাদীস পর্ব ১৪৪-১৬১ পৃষ্ঠা। হিদায়াহ দিরায়াহ ১০৬ পৃষ্ঠা। মেশকাত ৭৮ পৃষ্ঠা। বুখারী আযীযুল হক ১ম হাদীস নং ৪৪১। বুখারী- আধুনিক প্রকাশনী ১ম খণ্ড হাদীস নং ৭১২। বুখারী-ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭১৮। তিরমিযী- ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ২৪৭। মিশকাত- নূর মোহাম্মদ আযমী ২য় খণ্ড ও মাদ্রাসা পাঠ্য হাদীস নং ৭৬৫, ৭৬৬, ৭৯৪। বুলূগুল মারাম ৮৩ পৃষ্ঠা। কিমিয়ায়ে সায়াদাত ১ম খণ্ড ২০৪ পৃষ্ঠা ।)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ الْمَسْجِدَ، فَدَخَلَ رَجُلٌ فَصَلَّى فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَرَدَّ وَقَالَ ” ارْجِعْ فَصَلِّ، فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ ”. فَرَجَعَ يُصَلِّي كَمَا صَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ ” ثَلاَثًا. فَقَالَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أُحْسِنُ غَيْرَهُ فَعَلِّمْنِي. فَقَالَ ” إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَكَبِّرْ، ثُمَّ اقْرَأْ مَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ، ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَعْتَدِلَ قَائِمًا، ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا، وَافْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلاَتِكَ كُلِّهَا ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদে প্রবেশ করলেন, তখন একজন সাহাবী এসে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাম করলেন। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, আবার গিয়ে সালাত আদায় কর। কেননা, তুমিতো সালাত আদায় করনি। তিনি ফিরে গিয়ে পূর্বের মত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাম করলেন। তিনি বললেনঃ ফিরে গিয়ে আবার সালাত আদায় কর। কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। এভাবে তিনবার বললেন। সাহাবী বললেন, সেই মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন- আমিতো এর চেয়ে সুন্দর করে সালাত আদায় করতে জানি না। কাজেই আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ যখন তুমি সালাতের জন্য দাঁড়াবে, তখন তাকবীর বলবে। অতঃপর কুরআন হতে যা তোমার পক্ষে সহজ তা পড়বে। অতঃপর রুকু’তে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে রুকূ’ করবে। অতঃপর সিজদা হতে উঠে স্থির হয়ে বসবে। আর তোমার পুরো সালাতে এভাবেই করবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৮
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ قَالَ سَعْدٌ كُنْتُ أُصَلِّي بِهِمْ صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلاَتَىِ الْعَشِيِّ لاَ أَخْرِمُ عَنْهَا، أَرْكُدُ فِي الأُولَيَيْنِ وَأَحْذِفُ فِي الأُخْرَيَيْنِ. فَقَالَ عُمَرُ ـ رضى الله عنه ـ ذَلِكَ الظَّنُّ بِكَ.
জাবির ইব্নু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা’দ (রাঃ) বলেন, আমি তাদেরকে নিয়ে বিকালের দু’ সালাত (যুহর ও ‘আসর) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের মত সালাত আদায় করতাম। এতে কোন ত্রুটি করতাম না। প্রথম দু’ রাক’আতে কিরআত দীর্ঘায়িত এবং শেষ দু’ রাক’আতে তা সংক্ষিপ্ত করতাম। ‘উমর (রাঃ) বলেন, তোমার ব্যাপারে এটাই ধারণা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/৯৬ অধ্যায়ঃ
যুহরের সালাতে কিরাআত পড়া ।
৭৫৯
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ مِنْ صَلاَةِ الظُّهْرِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ وَسُورَتَيْنِ، يُطَوِّلُ فِي الأُولَى، وَيُقَصِّرُ فِي الثَّانِيَةِ، وَيُسْمِعُ الآيَةَ أَحْيَانًا، وَكَانَ يَقْرَأُ فِي الْعَصْرِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ وَسُورَتَيْنِ، وَكَانَ يُطَوِّلُ فِي الأُولَى، وَكَانَ يُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مِنْ صَلاَةِ الصُّبْحِ، وَيُقَصِّرُ فِي الثَّانِيَةِ.
আবূ ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের প্রথম দু’ রাক’আতে সূরা ফাতিহার সঙ্গে আরও দু’টি সূরা পাঠ করতেন। প্রথম রাক’আতে দীর্ঘ করতেন এবং দ্বিতীয় রাক’আত সংক্ষেপ করতেন। কখনো কোন আয়াত শুনিয়ে পড়তেন। ‘আসরের সালাতেও তিনি সূরা ফাতিহার সাথে অন্য দু’টি সূরা পড়তেন। প্রথম রাক’আত দীর্ঘ করতেন। ফজরের প্রথম রাক’আতও তিনি দীর্ঘ করতেন এবং দ্বিতীয় রাক’আতে সংক্ষেপ করতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৬০
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنِي عُمَارَةُ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ سَأَلْنَا خَ بابا أَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ قَالَ نَعَمْ. قُلْنَا بِأَىِّ شَىْءٍ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ قَالَ بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ.
আবূ মা’মার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা খাব্বাব (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি যুহ্র ও ‘আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমরা প্রশ্ন করলাম, আপনারা কী করে তা বুঝতেন? তিনি বললেন, তাঁর দাড়ির নড়াচড়ায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/৯৭. অধ্যায়ঃ
‘আসরের সালাতে কিরাআত ।
৭৬১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ قُلْتُ لِخَ باب بْنِ الأَرَتِّ أَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ قَالَ نَعَمْ. قَالَ قُلْتُ بِأَىِّ شَىْءٍ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ قِرَاءَتَهُ قَالَ بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ.
আবূ মা’মার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি খাব্বাব ইব্নু আরত্ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি যুহর ও ‘আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি জিজ্ঞেস করলাম আপনারা কী করে তাঁর কিরাআত বুঝতেন? তিনি বললেন, তাঁর দাড়ি নড়াচড়ায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৬২
حَدَّثَنَا الْمَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ مِنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ، وَسُورَةٍ سُورَةٍ، وَيُسْمِعُنَا الآيَةَ أَحْيَانًا.
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহর ও ‘আসরের প্রথম দু’ রাক’আতে সূরা আল-ফাতিহার সাথে আর একটি করে সূরা পড়তেন। আর কখনো কখনো কোন আয়াত আমাদের শুনিয়ে পড়তেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/৯৮. অধ্যায়ঃ
মাগরিবের সালাতে কিরাআত ।
৭৬৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّهُ قَالَ إِنَّ أُمَّ الْفَضْلِ سَمِعَتْهُ وَهُوَ يَقْرَأُ {وَالْمُرْسَلاَتِ عُرْفًا} فَقَالَتْ يَا بُنَىَّ وَاللَّهِ لَقَدْ ذَكَّرْتَنِي بِقِرَاءَتِكَ هَذِهِ السُّورَةَ، إِنَّهَا لآخِرُ مَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ بِهَا فِي الْمَغْرِبِ.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উম্মুল ফায্ল (রাঃ) তাঁকে ‘وَالمُرسَلاتِ غُرفاً’ সূরাটি তেলাওয়াত করতে শুনে বললেন, বেটা! তুমি এ সূরা তেলাওয়াত করে আমাকে স্মরণ করিয়ে দিলে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মাগরিবের সালাতে এ সূরাটি পড়তে শেষবারের মত শুনেছিলাম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৬৪
حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ مَرْوَانَ بْنِ الْحَكَمِ، قَالَ قَالَ لِي زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ مَا لَكَ تَقْرَأُ فِي الْمَغْرِبِ بِقِصَارٍ، وَقَدْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ بِطُولِ الطُّولَيَيْنِ
মারওয়ান ইব্নু হাকাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা যায়িদ ইব্নু সাবিত (রাঃ) আমাকে বললেন, কী ব্যাপার, মাগরিবের সালাতে তুমি যে কেবল ছোট ছোট সুরা তেলাওয়াত কর? অথচ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দু’টি দীর্ঘ সূরার মধ্যে অধিকতর দীর্ঘটি পাঠ করতে শুনেছি। [১]
[১] অপেক্ষাকৃত দু’টি দীর্ঘতম সূরা দ্বারা সূরা আরাফ ও সূরা আন’আমকে বুঝানো হয়েছে। আর এ দু’টির মাঝে দীর্ঘতম সূরা আরাফ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/৯৯. অধ্যায়ঃ
মাগরিবের সালাতে উচ্চৈঃস্বরে কিরাআত পাঠ ।
৭৬৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ فِي الْمَغْرِبِ بِالطُّورِ.
জুবায়র ইব্নু মুত’ইম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মাগরিবের সালাতে সূরা আত-তূর পড়তে শুনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১০০. অধ্যায়ঃ
‘ইশার সালাতে সশব্দে কিরাআত ।
৭৬৬
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، قَالَ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ بَكْرٍ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ الْعَتَمَةَ فَقَرَأَ {إِذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ} فَسَجَدَ فَقُلْتُ لَهُ قَالَ سَجَدْتُ خَلْفَ أَبِي الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم فَلاَ أَزَالُ أَسْجُدُ بِهَا حَتَّى أَلْقَاهُ.
আবূ রাফি’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর সঙ্গে ‘ইশার সালাত আদায় করলাম। সেদিন তিনি ‘إِذاَ السَّماءُ انشَقَّت’ সূরাটি তেলাওয়াত করে সিজদা করলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে এ সিজদা করেছি, তাই তাঁর সঙ্গে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত এ সূরায় সিজদা করব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৬৭
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَدِيٍّ، قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ فِي سَفَرٍ فَقَرَأَ فِي الْعِشَاءِ فِي إِحْدَى الرَّكْعَتَيْنِ بِالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ.
‘আদী (ইব্ন সাবিত) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বারা‘আ (রাঃ) হতে শুনেছি যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সফরে ‘ইশা সালাতের প্রথম দু‘ রাক‘আতের এক রাক‘আতে সূরা ‘وَالتّيِنِ وَالزَّيتوُنِ’ পাঠ করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১০১. অধ্যায়ঃ
‘ইশার সালাতে সিজদার আয়াত (সম্বলিত সুরা) তেলাওয়াত ।
৭৬৮
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، قَالَ حَدَّثَنِي التَّيْمِيُّ، عَنْ بَكْرٍ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ الْعَتَمَةَ فَقَرَأَ {إِذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ} فَسَجَدَ فَقُلْتُ مَا هَذِهِ قَالَ سَجَدْتُ بِهَا خَلْفَ أَبِي الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم فَلاَ أَزَالُ أَسْجُدُ بِهَا حَتَّى أَلْقَاهُ.
আবূ রাফি‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর সঙ্গে ‘ইশার সালাত আদায় করলাম। তিনি ‘إِذاَ السَّماءُ انشَقَّت’ সূরাটি তেলাওয়াত করে সিজদা করলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, এ সিজদা কেন? তিনি বলেন, আমি আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে এ সূরায় সিজদা করেছি, তাই তাঁর সঙ্গে মিলিত না হওয়া অবধি আমি এতে সিজদা করব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১০২. অধ্যায়ঃ
‘ইশার সালাতে কিরাআত ।
৭৬৯
حَدَّثَنَا خَلاَّدُ بْنُ يَحْيَى، قَالَ حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ، قَالَ حَدَّثَنَا عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ، سَمِعَ الْبَرَاءَ، رضى الله عنه قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ {وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ} فِي الْعِشَاءِ، وَمَا سَمِعْتُ أَحَدًا أَحْسَنَ صَوْتًا مِنْهُ أَوْ قِرَاءَةً.
বারা‘আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘ইশার সালাতে ‘وَالتّيِنِ وَالزَّيتوُنِ’ -“সূরা আত তীন” পড়তে শুনেছি। আমি তাঁর চেয়ে কারো সুন্দর কন্ঠ অথবা কিরাআত শুনিনি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১০৩. অধ্যায়ঃ
প্রথম দু‘রাক‘আতে কিরাআত দীর্ঘ করা ও শেষ দু’ রাক‘আতে তা সংক্ষেপ করা ।
৭৭০
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي عَوْنٍ، قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ سَمُرَةَ، قَالَ قَالَ عُمَرُ لِسَعْدٍ لَقَدْ شَكَوْكَ فِي كُلِّ شَىْءٍ حَتَّى الصَّلاَةِ. قَالَ أَمَّا أَنَا فَأَمُدُّ فِي الأُولَيَيْنِ، وَأَحْذِفُ فِي الأُخْرَيَيْنِ، وَلاَ آلُو مَا اقْتَدَيْتُ بِهِ مِنْ صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. قَالَ صَدَقْتَ، ذَاكَ الظَّنُّ بِكَ، أَوْ ظَنِّي بِكَ.
জাবির ইব্নু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমর (রাঃ) সা‘দ (রাঃ)-কে বললেন, আপনার বিরুদ্ধে তারা (কূফাবাসীরা) সর্ব বিষয়ে অভিযোগ করেছে, এমনকি সালাত সম্পর্কেও। সা‘দ (রাঃ) বললেন, আমি প্রথম দু‘রাক‘আতে কিরাআত দীর্ঘ করে থাকি এবং শেষের দু‘ রাক‘আতে তা সংক্ষেপ করি। আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে যেমন সালাত আদায় করেছি, তেমনই সালাত আদায়ের ব্যাপারে আমি ক্রটি করিনি। ‘উমর (রাঃ) বললেন আপনি ঠিকই বলেছেন, আপনার ব্যাপারে ধারণা এমনই, কিংবা (তিনি বলেছিলেন) আপনার সম্পর্কে আমার এ রকমই ধারণা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১০৪. অধ্যায়ঃ
ফজরের সালাতে কিরাআত ।
উম্মূ সালামা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূরা তূর পড়েছেন।
৭৭১
حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا سَيَّارُ بْنُ سَلاَمَةَ، قَالَ دَخَلْتُ أَنَا وَأَبِي، عَلَى أَبِي بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ فَسَأَلْنَاهُ عَنْ وَقْتِ الصَّلَوَاتِ، فَقَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي الظُّهْرَ حِينَ تَزُولُ الشَّمْسُ، وَالْعَصْرَ وَيَرْجِعُ الرَّجُلُ إِلَى أَقْصَى الْمَدِينَةِ وَالشَّمْسُ حَيَّةٌ، وَنَسِيتُ مَا قَالَ فِي الْمَغْرِبِ، وَلاَ يُبَالِي بِتَأْخِيرِ الْعِشَاءِ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ وَلاَ يُحِبُّ النَّوْمَ قَبْلَهَا، وَلاَ الْحَدِيثَ بَعْدَهَا، وَيُصَلِّي الصُّبْحَ فَيَنْصَرِفُ الرَّجُلُ فَيَعْرِفُ جَلِيسَهُ، وَكَانَ يَقْرَأُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ أَوْ إِحْدَاهُمَا مَا بَيْنَ السِّتِّينَ إِلَى الْمِائَةِ.
সাইয়ার ইব্নু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ও আমার পিতা আবূ বারযা আসলামী (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে সালাতসমূহের সময় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সালাত সূর্য ঢলে গেলেই আদায় করতেন। আর ‘আসর (এমন সময় যে, সালাতের শেষে) কোন ব্যক্তি সূর্য সতেজ থাকাবস্থায় মদীনার প্রান্তে ফিরে আসতে পারতো। মাগরিব সম্পর্কে তিনি কী বলেছিলেন, তা আমি ভুলে গেছি। আর তিনি রাতের এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত ‘ইশা বিলম্ব করতে কোন দ্বিধা করতেন না এবং ‘ইশার পূর্বে ঘুমানো ও পরে কথাবার্তা বলা তিনি পছন্দ করতেন না। আর তিনি ফজর আদায় করতেন এমন সময় যে, সালাত শেষে ফিরে যেতে লোকেরা তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তিকে চিনতে পারতো। এর দু’ রাক‘আতে অথবা রাবী বলেছেন, এক রাক‘আতে তিনি ষাট থেকে একশ’ আয়াত পাঠ করতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৭২
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ فِي كُلِّ صَلاَةٍ يُقْرَأُ، فَمَا أَسْمَعَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَسْمَعْنَاكُمْ، وَمَا أَخْفَى عَنَّا أَخْفَيْنَا عَنْكُمْ، وَإِنْ لَمْ تَزِدْ عَلَى أُمِّ الْقُرْآنِ أَجْزَأَتْ، وَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রত্যেক সালাতেই কিরাআত পড়া হয়। তবে যে সব সালাত আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের শুনিয়ে পড়েছেন, আমরাও তোমাদের শুনিয়ে পড়ব। আর যে সব সালাতে আমাদের না শুনিয়ে পড়েছেন, আমরাও তোমাদের না শুনিয়ে পড়ব। যদি তোমরা সূরা আল- ফাতিহার উপরে আরো অধিক না পড়, সালাত আদায় হয়ে যাবে। আর যদি অধিক পড় তা উত্তম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১০৫. অধ্যায়ঃ
ফজরের সালাতে সশব্দে কিরাআত ।
উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, আমি লোকদের পিছনে তাওয়াফ করছিলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন সালাত আদায় করছিলেন এবং সূরা তূর পাঠ করছিলেন ।
৭৭৩
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ انْطَلَقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي طَائِفَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ عَامِدِينَ إِلَى سُوقِ عُكَاظٍ، وَقَدْ حِيلَ بَيْنَ الشَّيَاطِينِ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ، وَأُرْسِلَتْ عَلَيْهِمُ الشُّهُبُ، فَرَجَعَتِ الشَّيَاطِينُ إِلَى قَوْمِهِمْ. فَقَالُوا مَا لَكُمْ فَقَالُوا حِيلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ، وَأُرْسِلَتْ عَلَيْنَا الشُّهُبُ. قَالُوا مَا حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ إِلاَّ شَىْءٌ حَدَثَ، فَاضْرِبُوا مَشَارِقَ الأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا، فَانْظُرُوا مَا هَذَا الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ فَانْصَرَفَ أُولَئِكَ الَّذِينَ تَوَجَّهُوا نَحْوَ تِهَامَةَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ بِنَخْلَةَ، عَامِدِينَ إِلَى سُوقِ عُكَاظٍ وَهْوَ يُصَلِّي بِأَصْحَابِهِ صَلاَةَ الْفَجْرِ، فَلَمَّا سَمِعُوا الْقُرْآنَ اسْتَمَعُوا لَهُ فَقَالُوا هَذَا وَاللَّهِ الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ. فَهُنَالِكَ حِينَ رَجَعُوا إِلَى قَوْمِهِمْ وَقَالُوا يَا قَوْمَنَا {إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا * يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ وَلَنْ نُشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا} فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم {قُلْ أُوحِيَ إِلَىَّ} وَإِنَّمَا أُوحِيَ إِلَيْهِ قَوْلُ الْجِنِّ.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয়েকজন সাহাবীকে সঙ্গে নিয়ে উকায বাজারের উদ্দেশে রওয়ানা করেন। আর দুষ্ট জিন-দের [১] উর্দ্ধলোকের সংবাদ সংগ্রহের পথে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয় এবং তাদের দিকে অগ্নিপিণ্ড নিক্ষিপ্ত হয়। কাজেই শয়তানরা তাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে আসে। তারা জিজ্ঞেস করলো, তোমাদের কী হয়েছে? তারা বলল, আমাদের এবং আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে বাধা দেখা দিয়েছে এবং আমাদের দিকে অগ্নিপিণ্ড ছুঁড়ে মারা হয়েছে। তখন তারা বলল, নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ একটা কিছু ঘটেছে বলেই তোমাদের এবং আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। কাজেই, পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত ঘুরে দেখ, কী কারণে তোমাদের ও আকাশের সংবাদ সংগ্রহের বাধা সৃষ্টি হয়েছে? তাই তাদের যে দলটি তিহামার দিকে গিয়েছিল, তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দিকে অগ্রসর হল। তিনি তখন ‘উকায বাজারের পথে নাখ্লা নামক স্থানে সাহাবীগণকে নিয়ে ফজরের সালাত আদায় করছিলেন। তারা যখন কুরআন শুনতে পেল, তখন সেদিকে মনোনিবেশ করলো। অতঃপর তারা বলে উঠলো, আল্লাহ্র শপথ! এটিই তোমাদের ও আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে বাধা সৃষ্টি করেছে। এমন সময় যখন তারা গোত্রের নিকট ফিরে আসল এবং বলল হে আমাদের সম্প্রদায়! আমরা এক আশ্চর্যজনক কুরআন শুনেছি যা সঠিক পথ নির্দেশ করে, আমরা এতে ঈমান এনেছি এবং কখনো আমরা আমাদের প্রতিপালকের সঙ্গে কাউকে শরীক স্থির করব না। এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ‘……قُل أُوحِيَ إِلَيَّ’ সূরা নাযিল করেন। মূলতঃ তাঁর নিকট জিনদের কথাবার্তাই ওয়াহীরূপে অবর্তীণ করা হয়েছে।
[১] হাদীসে উল্লেখিত “শায়াতিন” (شَياطين) শব্দটি দুষ্ট প্রকৃতির জিন্নদের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৭৪
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَرَأَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيمَا أُمِرَ، وَسَكَتَ فِيمَا أُمِرَ {وَمَا كَانَ رَبُّكَ نَسِيًّا} {لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ}.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেখানে কিরাআত পাঠের [১] জন্য আদেশ পেয়েছেন, সেখানে পড়েছেন। আর যেখানে চুপ থাকতে [২] আদেশ পেয়েছেন সেখানে চুপ থেকেছেন রয়েছেন। (আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী): “তোমার প্রতিপালক ভুল করেন না”-(সূরা মারইয়াম ১৯/৬৪)। “নিশ্চয় তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূল-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।” (সূরা আল-আহযাব ৩৩/২১)
————–
৭৭৪/১. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। কুবার মসজিদে এক আনসারী ব্যক্তি তাঁদের ইমামাত করতেন। তিনি সশব্দে কিরা-আত পড়া হয় এমন কোন সালাতে যখনই কোন সূরা তেলাওয়াত করতেন, قُل هُوَ اللهُ أَحَدٌ সূরা দ্বারা শুরু করতেন। তা শেষ করে অন্য একটি সূরা এর সাথে মিলিয়ে পড়তেন। আর প্রতি রাক‘আতেই তিনি এমন করতেন। তাঁর সঙ্গীরা এ ব্যাপারে তাঁর নিকট বললেন যে, আপনি এ সূরাটি দিয়ে শুরু করেন, এটি যথেষ্ট হয় বলে আপনি মনে করেন না তাই আর একটি সূরা মিলিয়ে পড়েন। হয় আপনি এটিই পড়বেন, না হয় এটি বাদ দিয়ে অন্যটি পড়বেন। তিনি বললেন, আমি এটি কিছুতেই ছাড়তে পারব না। আমার এভাবে ইমামাত করা যদি আপনারা অপছন্দ করেন, তাহলে আমি আপনাদের ইমামাত ছেড়ে দেব। কিন্তু তাঁরা জানতেন যে, তিনি তাদের মাঝে উত্তম। তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তাদের ইমামাত করুক এটা তাঁরা অপছন্দ করতেন। পরে নবী যখন তাঁদের এখানে আগমন করেন, তাঁরা বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানান। তিনি বললেন, হে, অমুক! তোমার সঙ্গীগণ যা বলেন তা করতে তোমাকে কিসে বাধা দেয়? আর প্রতি রাক‘আতে এ সূরাটি বাধ্যতামূলক করে নিতে কিসে উদ্বুদ্ধ করছে? তিনি বললেন, আমি এ সূরাটি ভালবাসি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ সূরার ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। (আ.প্র. অনুচ্ছেদ পৃষ্ঠা ৩৩৬, ই.ফা. অনুচ্ছেদ ৪৯৮ )
[১] অর্থাৎ সশব্দে পড়ার।
[২] নিঃশব্দে পড়ার।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১০৬. অধ্যায়ঃ
এক রাক‘আতে দু’ সূরা মিলিয়ে পড়া, সূরার শেষাংশ পড়া, এক সূরার পূর্বে আরেক সূরা পড়া এবং সূরার প্রথমাংশ পড়া ।
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু সায়িব (রহঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফজরের সালাতে সূরা মু’মিনূন পড়তে শুরু করেন। যখন মূসা (আঃ) ও হারূন (আঃ) বা ‘ঈসা (আঃ)-এর আলোচনা এল, তাঁর কাশি উঠল আর তখন তিনি রুকূ’তে চলে গেলেন। ‘উমর (রাঃ) প্রথম রাক‘আতে সূরা বাকারার একশ’বিশ আয়াত তেলাওয়াত করেন এবং দ্বিতীয় রাক‘আতে মাসানী সূরা সমূহের কোন একটি তেলাওয়াত করেন। আহনাফ (রহঃ) প্রথম রাক‘আতে সূরা কাহ্ফ তেলাওয়াত করেন এবং দ্বিতীয় রাক‘আতে সূরা ইউসুফ বা সূরা ইউনুস তেলাওয়াত করেন এবং তিনি বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ‘উমর (রাঃ)-এর পিছনে এ দু’টি সূরা দিয়ে ফজরের সালাত আদায় করেন। ইব্নু মাস’উদ (রাঃ) (প্রথম রাক‘আতে) সূরা আল-আনফালের চল্লিশ আয়াত পড়েন এবং দ্বিতীয় রাক‘আতে মুফাস্সাল সূরা সমূহের একটি পড়েন। যে ব্যক্তি দু’ রাক‘আতে একই সূরা ভাগ করে পড়ে বা দু’ রাক‘আতে একই সূরা দুহরিয়ে পড়ে তার সম্পর্কে কাতাদা (রহঃ) বলেন, সবই আল্লাহর কিতাব। (অর্থাৎ জায়িয)।
৭৭৫
حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا وَائِلٍ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى ابْنِ مَسْعُودٍ فَقَالَ قَرَأْتُ الْمُفَصَّلَ اللَّيْلَةَ فِي رَكْعَةٍ. فَقَالَ هَذًّا كَهَذِّ الشِّعْرِ لَقَدْ عَرَفْتُ النَّظَائِرَ الَّتِي كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرِنُ بَيْنَهُنَّ فَذَكَرَ عِشْرِينَ سُورَةً مِنَ الْمُفَصَّلِ سُورَتَيْنِ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ.
আবূ ওয়াইল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি ইব্নু মাস’উদ (রাঃ)-এর নিকট এসে বলল, গতরাতে আমি মুফাস্সাল সূরাগুলো এক রাক‘আতেই তেলাওয়াত করেছি। তিনি বললেন, তাহলে নিশ্চয়ই কবিতার ন্যায় দ্রুত পড়েছ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরস্পর সমতুল্য যে সব সূরা মিলিয়ে পড়তেন, সেগুলো সম্পর্কে আমি জানি। এ বলে তিনি মুফাস্সাল সূরাসমূহের বিশটি সূরা উল্লেখ পূর্বক বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি রাক‘আতে এর দু’টি করে সূরা পড়তেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১০৭. অধ্যায়ঃ
শেষ দু’ রাক‘আতে সূরা ফাতিহা পড়া ।
৭৭৬
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ فِي الأُولَيَيْنِ بِأُمِّ الْكِتَابِ وَسُورَتَيْنِ، وَفِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُخْرَيَيْنِ بِأُمِّ الْكِتَابِ، وَيُسْمِعُنَا الآيَةَ، وَيُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مَا لاَ يُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ، وَهَكَذَا فِي الْعَصْرِ وَهَكَذَا فِي الصُّبْحِ.
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের প্রথম দু’রাক‘আতে সূরা আল-ফাতিহা ও দু’টি সূরা পড়তেন এবং শেষ দু’রাক‘আতে সূরা আল-ফাতিহা পাঠ করতেন এবং তিনি কোন কোন আয়াত আমাদের শোনাতেন, আর তিনি প্রথম রাক‘আতে যত দীর্ঘ করতেন, দ্বিতীয় রাক‘আতে তত দীর্ঘ করতেন না। ‘আসরে এবং ফজরেও এ রকম করতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১০৮. অধ্যায়ঃ
যুহরে ও ‘আসরে নিঃশব্দে কিরাআত পড়া ।
৭৭৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قُلْتُ لِخَ باب أَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ قَالَ نَعَمْ. قُلْنَا مِنْ أَيْنَ عَلِمْتَ قَالَ بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ.
আবূ মা‘মার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা খাব্বাব (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি যুহর ও আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেন হ্যাঁ। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, কী করে বুঝলেন? তিনি বললেন, তাঁর দাড়ি নড়াচড়া দেখে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১০৯. অধ্যায়ঃ
ইমাম আয়াত শুনিয়ে পাঠ করলে ।
৭৭৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقْرَأُ بِأُمِّ الْكِتَابِ وَسُورَةٍ مَعَهَا فِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ مِنْ صَلاَةِ الظُّهْرِ وَصَلاَةِ الْعَصْرِ، وَيُسْمِعُنَا الآيَةَ أَحْيَانًا، وَكَانَ يُطِيلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى.
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহর ও আসরের সালাতের প্রথম দু’রাক‘আতে সূরা ফাতিহার সাথে আরেকটি সূরা পড়তেন। কখনো কোন কোন আয়াত আমাদের শুনিয়ে পড়তেন এবং তিনি প্রথম রাক‘আতে কিরাআত দীর্ঘ করতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১১০. অধ্যায়ঃ
প্রথম রাক‘আতে কিরাআত দীর্ঘ করা ।
৭৭৯
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مِنْ صَلاَةِ الظُّهْرِ، وَيُقَصِّرُ فِي الثَّانِيَةِ، وَيَفْعَلُ ذَلِكَ فِي صَلاَةِ الصُّبْحِ.
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সালাতের প্রথম রাক‘আতে কিরাআত দীর্ঘ করতেন ও দ্বিতীয় রাক‘আতে সংক্ষিপ্ত করতেন এবং এ রকম করতেন ফজরের সালাতেও।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১১১. অধ্যায়ঃ
ইমামের সশব্দে ‘আমীন’ বলা ।
‘আত্বা (রহঃ) বলেন, ‘আমীন’ হল দু‘আ। তিনি আরও বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যুবায়র (রাঃ) ও তাঁর পিছনের মুসুল্লীগণ এমনভাবে ‘আমীন’বলতেন যে, মসজিদে গুমগুম আওয়ায হতো। আবূ হুরায়রা (রাঃ) ইমামকে ডেকে বলতেন, আমাকে ‘আমীন’বলার সুযোগ হতে বঞ্চিত করবেন না। নাফি‘ (রহঃ) বলেন, ইব্নু ‘উমর (রাঃ) কখনই ‘আমীন’ বলা ছাড়তেন না এবং তিনি তাদের (আমীন বলার জন্য) উৎসাহিত করতেন। আমি তাঁর কাছ হতে এ সম্পর্কে হাদীস শুনেছি।
৭৮০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَأَبِي، سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهُمَا أَخْبَرَاهُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِذَا أَمَّنَ الإِمَامُ فَأَمِّنُوا فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ تَأْمِينُهُ تَأْمِينَ الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ”. وَقَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” آمِينَ ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইমাম যখন ‘আমীন’ বলেন, তখন তোমরাও ‘আমীন’ বলো। কেননা, যার ‘আমীন’ (বলা) ও মালাইকার ‘আমীন’ (বলা) এক হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মা‘ফ করে দেয়া হয়। ইব্নু শিহাব (রহঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ‘আমীন’ বলতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১১২. অধ্যায়ঃ
‘আমীন’ বলার ফযীলত ।
৭৮১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِذَا قَالَ أَحَدُكُمْ آمِينَ. وَقَالَتِ الْمَلاَئِكَةُ فِي السَّمَاءِ آمِينَ. فَوَافَقَتْ إِحْدَاهُمَا الأُخْرَى، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ (সালাতে) ‘আমীন’ বলে, আর আসমানে মালাইকাহ্ ‘আমীন’ বলেন এবং উভয়ের ‘আমীন’ একই সময় হলে, তার পূর্ববর্তী সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেয়া হয়। [১]
[১] যেহরী সালাতে উচ্চৈঃস্বরে আমীন না বলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবাদের আমলের বিপরীত, বরং ইমাম ও মুক্তাদির সকলেরই সরবে আমীন বলতে হবে। কেননা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেহ্রী সালাতে উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলতেন এবং ইমাম যখন আমীন বলে তখন মুক্তাদিকে আমীন বলার নির্দেশ দিতেন যেমন ৭৮০ নং হাদীস বর্ণিত। এছাড়াও তিরমিযী বর্ণিত হাদীসে আছেঃ
ওয়ায়িল বিন হুজর (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে “গায়রিল মাগযূবি ‘আলাইহিম অলায্যাল্লীন” পড়তে শুনেছি। অতঃপর তিনি নিজের স্বরকে উচ্চ করে আমীন বলেছেন ।
(বুখারী ১ম ১০৭-১০৮ পৃষ্ঠা; মুসলিম ১৭৬ পৃষ্ঠা। আবূ দাউদ ১৩৪ পৃষ্ঠা। তিরমিযী ৫৭-৫৮ পৃষ্ঠা। নাসাঈ ১৪০ পৃষ্ঠা। ইব্নু মাজাহ ৬২ পৃষ্ঠা। মেশকাত ১ম খণ্ড ৭৯-৮০ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তামালেক ১০৮ পৃষ্ঠা। ইব্নু খুযায়মাহ ১ম ২৮৭ পৃষ্ঠা। যাদুল মায়াদ ১ম খণ্ড ১৩২ পৃষ্ঠা। হিদায়া হিরায়াহ ১০৮ পৃষ্ঠা। মেশকাত নূর মোহাম্মদ আযমী ২য় খণ্ড ও মাদ্রাসা পাঠ্য হাদীস নং ৭৬৮-৭৮৭। বুখারী আযীযুল হক ১ম খণ্ড হাদীস নং ৪৫৩, বুখারী আধুনিক প্রকাশনী ১ম খণ্ড হাদীস নং ৭৩৬-৭৩৮, বুখারী ইসলামিত ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড অনুচ্ছেদসহ হাদীস নং ৭৪১-৭৪৩। মুসলিম ইঃফাঃ ২য় খণ্ড হাদীস নং-৭৯৭-৮০৪ পর্যন্ত। আবূ দাউদ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৯৩২। তিরমিযী ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ২৪৮, বুলূগুল মারাম বাংলা ৮৫ পৃষ্ঠা, কিমিয়ায়ে সায়াদাত ১ম খণ্ড ১৯০ পৃষ্ঠা। ইসলামিয়াত বি-এ হাদীস পর্ব ১৫৭ পৃষ্ঠা)
সাহাবীদের উচ্চৈঃস্বরে ‘আমীন’বলাঃ
আত্বা বলেনঃ “আমীন একটি দু‘আ। ইব্নু জুবায়র (রাঃ) আমীন বলেছেন এবং তাঁর পিছনের লোকেরা বলেছেন এমন কি মসজিদ আমীন ধ্বনিতে গুঞ্জরিত হয়েছিল ।” (বুখারী, তাগলীকুত তা‘লীক ২/৩১৮, হাফিয ইব্নু হাজার)
বড় পীর সাহেবের উচ্চৈঃস্বরে ‘আমীন’ বলা
শায়খ আবদুল ক্বাদীর জীলানী (রহঃ) ‘গুনায়তুত্ তালেবীন’ গ্রন্থে সালাতের সুন্নাতসমূহ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেনঃ
“এবং উচ্চৈঃস্বরে কেরাত পড়া ও ‘আমীন’ বলা। (গুনয়াতুত তালেবীন পৃঃ ১০, আইয়ুবিয়া প্রেসে প্রকাশিত)
মুজাদ্দিদে আল্ফেসানী (রহঃ)-এর উচ্চৈঃস্বরে ‘আমীন’ বলা ।
মুজাদ্দিদে আলফেসানী শায়খ আহমাদ সারহিন্দী (রহঃ) বলেনঃ
“উচ্চৈঃস্বরে ‘আমীন’ বলার হাদীছ সমূহ বেশী এবং অতি শুদ্ধ ।” (আবকারূল মিনান পৃষ্ঠ ১৮৯)
হানাফী ‘আলিমগণের উচ্চৈঃ স্বরে ‘আমীন’ বলা
শায়খ ‘আবদুল হক মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহঃ) বলেনঃ
“রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূরা ফাতিহার শেষে আমীন বলতেন জাহরী সালাতে (অর্থাৎ মাগরিব, ইশা ও ফজরে) উচ্চৈঃস্বরে আর সিররী ছলাতে (অর্থাৎ যুহর ও ‘আসরে) নিম্নস্বরে। (মাদারিজুন নুবুওয়াত পৃষ্ঠা ২০১)
আল্লামা আবদুল হাই লক্ষ্মৌবী (রহঃ) বলেনঃ
“ন্যায়সঙ্গত কথা হলো, দলীল অনুযায়ী উচ্চৈঃস্বরে ‘আমীন’ বলা মজবুত ।” (আত্ তা‘লীকুল মুমাজ্জাদ ১০৩ পৃষ্ঠা)
তিনি আরো বলেনঃ
“গভীর চিন্তা গবেষণার পর আমরা উচ্চৈঃস্বরে ‘আমীন’ বলাকেই অতি সঠিক পেলাম। কেননা এটা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত রিওয়ায়াতের সাথে মিলে। আর নিম্নস্বরে ‘আমীন’ বলার রিওয়ায়াতগুলো দূর্বল তাই উচ্চৈঃস্বরে বলার রিওয়ায়াতের সমকক্ষতা করতে পারবে না ।” (আস্ সিআয়া ১/১৩৬)
আমীন বলার স্বপক্ষে ১৭টি হাদীস এসেছে। (রওযাতুন নাদিইয়াহ ১/২৭১) যার মধ্যে আমীন আস্তে বলার পক্ষে শু‘বা হতে একটি রিওয়ায়াত আহমাদ ও দারাকুৎনীতে এসেছে —– অর্থাৎ আমীন বলার সময় রসূলুল্লাহ্ সল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আওয়ায নিম্ন হত। একই রিওয়ায়াতে সুফ্ইয়ান সত্তরূ (রহঃ) হতে এসে —- অর্থাৎ তাঁর আওয়ায উচ্চ হত। হাদীস বিশারদগণের নিকট শু‘বা থেকে বর্ণিত নিম্নস্বরে আমীন বলার হাদীসটি মুযতারাব। যার সনদ ও মতনে নাম ও শব্দগত ভুল থাকার কারণে য’ঈফ। পক্ষান্তরে সুফ্ইয়ান সত্তরী (রহঃ) বর্ণিত সরবে আমীন বলার হাদীসটি এসব ক্রটি হতে মুক্ত হবার কারণে সহীহ। (দারাকুতনী হাঃ ১২৫৬ এর ভাষ্য, রওযাতুন নাদিয়াহ ১/২৭২, নায়লুল আওত্বার ৩/৭৫)
শু‘বাহ্র ভুলঃ
শু‘বাহ্র প্রথম ভুল এই যে, তিনি হুজরকে আমবাসের পিতা বলে উল্লেখ করেছেন। প্রকৃত কথ এই যে, হুজর আমবাসের পিতা নন, পুত্র। আর তার কুনিয়াত হচ্ছে আবা সাকান। (তিরমিযী, আহমদী ছাপা ৪৯ পৃষ্ঠা)
ও তাঁর দ্বিতীয় ভ্রান্তি এই যে, এই হাদীসের সনদে আলকামা বিন অয়েলকে অতিরিক্ত আমদানী করা হয়েছে। অথচ সনদে তাঁর উল্লেখ নাই । তাঁর তৃতীয় ভূল এই যে, হাদীসের মতনে তিনি যেখানে বলেন-রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমীন শব্দটি আস্তে বললেন প্রকৃত প্রস্তাবে তা হবে যে, তিনি আমীন সশব্দে উচ্চারণ করলেন ।
স্বয়ং মোল্লা আলী কারী হানাফী তদীয় মিশকাতের শরাহ মিরকাতে আকুন্ঠ ভাষায় স্বীকার করেছেন যে, হাদীসবিদগণ শো‘বার এই ভূল সম্পর্কে একমত। তিনি বলেন, সর্বস্বীকৃত সঠিক কথা হচ্ছে ‘মাদ্দাবিহা সাওতাহু ও রাফা’আ বেহা সাওতাহু অর্থাৎ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমীনের শব্দ দারাজ করে পড়লেন এবং উচ্চকন্ঠে পড়লেন। লম্বা করে টেনে পড়ার কথা তিরমিযী, আহমাদ ও ইব্নু আবী শায়বা রিওয়ায়াত করেছেন আর উচ্চকন্ঠে পড়ার কথা আবু দাউদ রিওয়ায়াত করেছেন। এতদ্ব্যতীত বাইহাকী তদীয় হাদীস গ্রন্থে ও ইব্নু হিব্বান স্বীয় সহীতে ‘আতার বাচনিক রিওয়ায়াত করেছেন যে, তিনি বলেন, “আমি সাহাবীগণের মধ্যে এমন দু’শত জনকে পেয়েছি যারা ইমাম ওয়ালায্যাল্লীন বলার পর বুলন্দ আওয়াজে আমীন বলতেন ।”
শু’বাহ্র হাদীস যে যয়ীফ সে সম্পর্কে তাঁর উপরোল্লিখিত ৩টি ভ্রান্তি এবং মোল্লা আলী কারীর উপরোদ্ধৃত মন্তব্যের পর কোনই সন্দেহ থাকতে পারে না। এর উপর তার বর্ণিত সনদে দেখা যায়, আলকামা তদীয় পিতা অয়েল হতে এই হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। কিন্তু মজার কথা এই যে, তিনি তাঁর পিতার নিকট এই হাদীস শুনেননি-শুনতে পারেন না। এ সম্পর্কে হাফিয ইব্নু হাজার তদীয় ‘তক্রীবুত্ তাহ্যীব’ নামক রিজাল শাস্ত্রের গ্রন্থে কী বলেন- পাঠক মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করুন! তিনি বলেনঃ
‘আলক্বামাহ বিল অয়েল বিন হুজর-(পেশযুক্ত হা ও সাকিনযুক্ত জীম) হাজরামী কুফী (রাবী হিসাবে) সত্যবাদী (সন্দেহ নাই)। কিন্তু নিশ্চিত কথা এই যে, তিনি তাঁর পিতা হতে হাদীস শ্রবণ করেননি। পিতার নিকট হতে পুত্র কোন হাদীস শ্রবণ করতে পারেননি সে কথার রহস্য উদঘাটন করে দিয়েছেন শায়খ ইব্নু হুমাম হানাফী স্বীয় ফাতহুল কাদীর গ্রন্থে। তিনি ওটাতে লিখেছেনঃ
অর্থাৎ ইমাম তিরমিযী স্বীয় ইলালে কবীর গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি ইমাম বুখারীকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “আলকামা কি স্বীয় পিতার নিকট হাদীস শ্রবণ করেছিলেন?” তদুত্তরে ইমাম বুখারী (হাঁ, ‘না কিছুই না বলে) বললেন, তিনি (‘আলক্বামাহ) স্বীয় পিতার মৃত্যুর ৬ মাস পর জন্মগ্রহণ করেন। (দেখুন ফাতহুল কাদীর, নলকিশোর ছাপা, ১ম খণ্ড ১২১ পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১১৩. অধ্যায়ঃ
মুক্তাদীর সশব্দে ‘আমীন’ বলা ।
৭৮২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ سُمَىٍّ، مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِذَا قَالَ الإِمَامُ {غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ} فَقُولُوا آمِينَ. فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ قَوْلُهُ قَوْلَ الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ”. تَابَعَهُ مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَنُعَيْمٌ الْمُجْمِرُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه.
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইমাম ‘غَيرِ المَغضوُبِ عَلَيهِم وَلاَ الضّاَلّين’ পড়লে তোমরা ‘আমীন’ বলো। কেননা, যার এ (আমীন) বলা মালাকগণের (আমীন) বলার সাথে একই সময় হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। মুহাম্মাদ ইব্নু ‘আমর (রহঃ) আবূ সালামা (রহঃ) সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর মাধ্যমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এবং নু‘আইম- মুজমির (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে হাদীস বর্ণনায় সুমাই (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১১৪. অধ্যায়ঃ
কাতারে পৌঁছার পূর্বেই রুকূ’তে চলে গেলে ।
৭৮৩
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنِ الأَعْلَمِ ـ وَهْوَ زِيَادٌ ـ عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، أَنَّهُ انْتَهَى إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ رَاكِعٌ، فَرَكَعَ قَبْلَ أَنْ يَصِلَ إِلَى الصَّفِّ، فَذَكَرَ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ “ زَادَكَ اللَّهُ حِرْصًا وَلاَ تَعُدْ ”.
আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এমন অবস্থায় পৌঁছলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন রুকূ‘তে ছিলেন। তখন কাতার পর্যন্ত পৌঁছার পূর্বেই তিনি রুকূ‘তে চলে যান। এ ঘটনা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ব্যক্ত করা হলে, তিনি বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা তোমার আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে দিন। তবে এ রকম আর করবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১১৫. অধ্যায়ঃ
রুকূ‘তে তাকবীর পূর্ণভাবে বলা ।
এ ব্যাপারে ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। এ বিষয়ে মালিক ইব্নু হুওয়ারিস (রাঃ) হতেও রিওয়ায়াত বর্ণিত আছে।
৭৮৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ الْوَاسِطِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنِ الْجُرَيْرِيِّ، عَنْ أَبِي الْعَلاَءِ، عَنْ مُطَرِّفٍ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ صَلَّى مَعَ عَلِيٍّ ـ رضى الله عنه ـ بِالْبَصْرَةِ فَقَالَ ذَكَّرَنَا هَذَا الرَّجُلُ صَلاَةً كُنَّا نُصَلِّيهَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. فَذَكَرَ أَنَّهُ كَانَ يُكَبِّرُ كُلَّمَا رَفَعَ وَكُلَّمَا وَضَعَ.
‘ইমরান ইব্নু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বসরায় ‘আলী (রাঃ)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর বললেন, ইনি [‘আলী (রাঃ)] আমাকে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে আদায়কৃত সালাতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। আর তিনি উল্লেখ করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতিবার (মাথা) উঠাতে ও নামাতে তাকবীর বলতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৮৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ كَانَ يُصَلِّي بِهِمْ، فَيُكَبِّرُ كُلَّمَا خَفَضَ وَرَفَعَ، فَإِذَا انْصَرَفَ قَالَ إِنِّي لأَشْبَهُكُمْ صَلاَةً بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم.
আবূ সালামা ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তাদের সঙ্গে সালাত আদায় করতেন এবং প্রতিবার উঠা বসার সময় তাকবীর বলতেন। সালাত শেষ করে তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে আমার সালাতই আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১১৬. অধ্যায়ঃ
সিজদার তাকবীর পূর্ণভাবে বলা ।
৭৮৬
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ غَيْلاَنَ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ مُطَرِّفِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ صَلَّيْتُ خَلْفَ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ ـ رضى الله عنه ـ أَنَا وَعِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ،، فَكَانَ إِذَا سَجَدَ كَبَّرَ، وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ كَبَّرَ، وَإِذَا نَهَضَ مِنَ الرَّكْعَتَيْنِ كَبَّرَ، فَلَمَّا قَضَى الصَّلاَةَ أَخَذَ بِيَدِي عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ فَقَالَ قَدْ ذَكَّرَنِي هَذَا صَلاَةَ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم. أَوْ قَالَ لَقَدْ صَلَّى بِنَا صَلاَةَ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم.
মুতার্রিফ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এবং ‘ইমরান ইব্নু হুসায়ন (রাঃ) ‘আলী ইব্নু ত্বলিব (রাঃ)-এর পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি যখন সিজদায় গেলেন তখন তাকবীর বললেন, সিজদা হতে যখন মাথা উঠালেন তখনও তাকবীর বললেন, আবার দু’রাক‘আতের পর যখন দাঁড়ালেন তখনও তাকবীর বললেন। তিনি যখন সালাত শেষ করলেন তখন ‘ইমরান ইব্নু হুসায়ন (রাঃ) আমার হাত ধরে বললেন, ইনি [‘আলী (রাঃ)] আমাকে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বা তিনি বলেছিলেন, আমাদের নিয়ে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের ন্যায় সালাত আদায় করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৮৭
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، قَالَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، قَالَ رَأَيْتُ رَجُلاً عِنْدَ الْمَقَامِ يُكَبِّرُ فِي كُلِّ خَفْضٍ وَرَفْعٍ وَإِذَا قَامَ وَإِذَا وَضَعَ، فَأَخْبَرْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ أَوَلَيْسَ تِلْكَ صَلاَةَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لاَ أُمَّ لَكَ.
‘ইকরিমাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মাকামে (ইব্রাহীমের নিকট) এক ব্যক্তিকে দেখলাম যে, প্রতিবার উঠা ও ঝুঁকার সময় এবং দাঁড়ানো ও বসার সময় তাকবীর বলছেন। আমি ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে এ কথা জানালে তিনি বললেন, তুমি মাতৃহীন হও [১], একি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত নয়?
[১] এটা তিরস্কার স্বরূপ বলা হয়েছে, খারাপ উদ্দেশে নয় ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১১৭. অধ্যায়ঃ
সিজদা হতে দাঁড়ানোর সময় তাকবীর বলা ।
৭৮৮
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ أَخْبَرَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، قَالَ صَلَّيْتُ خَلْفَ شَيْخٍ بِمَكَّةَ فَكَبَّرَ ثِنْتَيْنِ وَعِشْرِينَ تَكْبِيرَةً، فَقُلْتُ لاِبْنِ عَبَّاسٍ إِنَّهُ أَحْمَقُ. فَقَالَ ثَكِلَتْكَ أُمُّكَ، سُنَّةُ أَبِي الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم. وَقَالَ مُوسَى حَدَّثَنَا أَبَانُ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ.
‘ইকরিমাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মক্কায় এক বৃদ্ধের পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি বাইশবার তাকবীর বললেন। আমি ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বললাম, লোকটি তো আহ্মক। তিনি বললেন, তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক। এ যে আবুল ক্বাসিম-এর সুন্নাত। মূসা (রহঃ) বলেন, আবান (রহঃ) ক্বাতাদা (রহঃ) সূত্রেও ‘ইকরিমাহ (রাঃ) হতে এ হাদীসটি সরাসরি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৮৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ يُكَبِّرُ حِينَ يَقُومُ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَرْكَعُ، ثُمَّ يَقُولُ سَمِعَ اللَّهُ لَمِنْ حَمِدَهُ. حِينَ يَرْفَعُ صُلْبَهُ مِنَ الرَّكْعَةِ، ثُمَّ يَقُولُ وَهُوَ قَائِمٌ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ ـ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ {بْنُ صَالِحٍ عَنِ اللَّيْثِ} وَلَكَ الْحَمْدُ ـ ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَهْوِي، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَسْجُدُ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ، ثُمَّ يَفْعَلُ ذَلِكَ فِي الصَّلاَةِ كُلِّهَا حَتَّى يَقْضِيَهَا، وَيُكَبِّرُ حِينَ يَقُومُ مِنَ الثِّنْتَيْنِ بَعْدَ الْجُلُوسِ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত আরম্ভ করার সময় দাঁড়িয়ে তাকবীর বলতেন। অতঃপর রুকূ‘তে যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন, আবার যখন রুকূ‘ হতে পিঠ সোজা করে উঠতেন তখন ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বলতেন, অতঃপর দাঁড়িয়ে ‘رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ ‘ বলতেন। অতঃপর সিজদায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন। এবং যখন মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলতেন। আবার (দ্বিতীয়) সিজদায় যেতে তাকবীর বলতেন এবং পুনরায় মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলতেন। এভাবেই তিনি পুরো সালাত শেষ করতেন। আর দ্বিতীয় রাক‘আতের বৈঠক শেষে যখন (তৃতীয় রাক‘আতের জন্য) দাঁড়াতেন তখনও তাকবীর বলতেন। ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু সালিহ্ (রহঃ) লাইস (রহঃ) সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করতে ‘وَلَكَ الحَمدُ’ উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১১৮. অধায়ঃ
রুকূ‘তে হাঁটুর উপর হাত রাখা ।
আবূ হুমায়দ (রাঃ) তাঁর সঙ্গীদের সামনে বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (রুকূ‘র সময়) দু‘ হাত দিয়ে উভয় হাঁটুতে ভর দিতেন ।
৭৯০
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي يَعْفُورٍ، قَالَ سَمِعْتُ مُصْعَبَ بْنَ سَعْدٍ، يَقُولُ صَلَّيْتُ إِلَى جَنْبِ أَبِي فَطَبَّقْتُ بَيْنَ كَفَّىَّ ثُمَّ وَضَعْتُهُمَا بَيْنَ فَخِذَىَّ، فَنَهَانِي أَبِي وَقَالَ كُنَّا نَفْعَلُهُ فَنُهِينَا عَنْهُ، وَأُمِرْنَا أَنْ نَضَعَ أَيْدِيَنَا عَلَى الرُّكَبِ.
মুস‘আব ইব্নু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমি আমার পিতার পাশে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলাম। এবং (রুকু‘র সময়) দু’ হাত জোড় করে উভয় উরুর মাঝে রাখলাম। আমার পিতা আমাকে এমন করতে নিষেধ করলেন এবং বললেন, আগে আমরা এমন করতাম; পরে আমাদেরকে এ হতে নিষেধ করা হয়েছে এবং হাত হাঁটুর উপর রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১১৯. অধ্যায়ঃ
যদি কেউ সঠিকভাবে রুকু‘ না করে ।
৭৯১
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سُلَيْمَانَ، قَالَ سَمِعْتُ زَيْدَ بْنَ وَهْبٍ، قَالَ رَأَى حُذَيْفَةُ رَجُلاً لاَ يُتِمُّ الرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ قَالَ مَا صَلَّيْتَ، وَلَوْ مُتَّ مُتَّ عَلَى غَيْرِ الْفِطْرَةِ الَّتِي فَطَرَ اللَّهُ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم.
যায়দ ইব্নু ওয়াহ্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুযাইফা (রাঃ) এক ব্যক্তিকে দেখলেন যে, সে রুকূ‘ ও সিজদা ঠিকমত আদায় করছে না। তিনি তাকে বললেন, তোমার সালাত হয়নি। যদি তুমি (এই অবস্থায়) মারা যাও, তাহলে আল্লাহ্ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যে আদর্শ দিয়েছেন সে আদর্শ হতে বিচ্যুত অবস্থায় তুমি মারা যাবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১২০. অধায়ঃ
রুকূ‘তে পিঠ সোজা রাখা ।
আবূ হুমায়দ (রাঃ) তাঁর সাথীদের সামনে বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকূ‘ করতেন এবং রুকূ‘তে পিঠ সোজা রাখতেন ।
১০/১২১. অধায়ঃ
রুকূ‘ পূর্ণ করার সীমা এবং এতে মধ্যম পন্থা ও ধীরস্থিরতা অবলম্বন ।
৭৯২
حَدَّثَنَا بَدَلُ بْنُ الْمُحَبَّرِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنِي الْحَكَمُ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ كَانَ رُكُوعُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَسُجُودُهُ وَبَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ وَإِذَا رَفَعَ مِنَ الرُّكُوعِ، مَا خَلاَ الْقِيَامَ وَالْقُعُودَ، قَرِيبًا مِنَ السَّوَاءِ.
বারা‘আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সালাতে দাঁড়ানো ও বসা অবস্থা ছাড়া নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রুকূ‘, সিজদা এবং দু’ সিজদার মধ্যবর্তী সময় এবং রুকূ‘ হতে উঠে দাঁড়ানো, এগুলো প্রায় সমপরিমাণ ছিল।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১২২. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি সঠিকভাবে রুকূ‘ করেনি তাকে পুনরায় সালাত আদায়ের জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ ।
৭৯৩
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ أَخْبَرَنِي يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَدَخَلَ رَجُلٌ فَصَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَرَدَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِ السَّلاَمَ فَقَالَ ” ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ ” فَصَلَّى، ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ ”. ثَلاَثًا. فَقَالَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ فَمَا أُحْسِنُ غَيْرَهُ فَعَلِّمْنِي. قَالَ ” إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَكَبِّرْ، ثُمَّ اقْرَأْ مَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ، ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَعْتَدِلَ قَائِمًا، ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا، ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا، ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا، ثُمَّ افْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلاَتِكَ كُلِّهَا ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একসময়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদে তাশরীফ আনলেন, তখন এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সালাত আদায় করলো। অতঃপর সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাম করলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সালামের জবাব দিয়ে বললেনঃ তুমি ফিরে গিয়ে সালাত আদায় কর, কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। লোকটি আবার সালাত আদায় করল এবং আবার এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাম দিল। তিনি বললেনঃ আবার গিয়ে সালাত আদায় কর, কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। এভাবে তিনবার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। অতঃপর লোকটি বলল, সে মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, আমি এর চেয়ে সুন্দর সালাত আদায় করতে জানি না। কাজেই, আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন। তখন তিনি বললেনঃ যখন তুমি সালাতে দাঁড়াবে, তখন তাকবীর বলবে। অতঃপর কুরআন হতে যতটুকু তোমার পক্ষে সহজ ততটুকু পড়বে। অতঃপর রুকূ‘তে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে রুকূ‘ আদায় করবে। অতঃপর রুকূ‘ হতে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। ধীরস্থিরভাবে সিজদা করবে। অতঃপর সিজদা হতে উঠে স্থিরভাবে বসবে এবং পুনরায় সিজদায় গিয়ে স্থিরভাবে সিজদা করবে। অতঃপর পুরো সালাত এভাবে আদায় করবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১২৩. অধ্যায়ঃ
রুকূ‘তে দু‘আ ।
৭৯৪
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ فِي رُكُوعِهِ وَسُجُودِهِ “ سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ”.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকূ‘ ও সিজদায় এ দু‘আ পড়তেন- ‘سُبحاَنَكَ اللَّهُمَّ رَبّاَناَ وَبِحَمدِكَ اللَهُمَّ إِغفِرليِ’ “হে আমাদের রব আল্লাহ্! আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং আপনার প্রশংসা করছি। হে আল্লাহ্! আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন”।[১]
[১] আধুনিক প্রকাশনীর ৭৫০ নম্বর হাদীসের টীকায় লিখা হয়েছে- “রুকূ‘ ও সিজদায় এ দু‘আ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইসলামের প্রথম দিকে পড়তেন। তখন রুকূ‘তে সুবহানা রব্বিয়াল ‘আযীম ও সিজদায় সুবহানা রব্বিয়াল আ’লা পড়ার নির্দেশ হয়নি। পড়ে এ দু‘টি দু‘আ নাযিল হলে এবং তা পড়বার আদেশ হলে পূর্বে উল্লেখিত দু‘আ মানসূখ বা বাতিল হয়ে যায় ।” এটি একেবারেই মনগড়া ও হাদীস বিরোধী কথা যার কোন দলীল নেই। ইমাম ইব্নু কাইয়্যিম যাদুল মা‘আদে এবং নাসিরুদ্দিন আলবানী স্বীয় সিফাত গ্রন্থে রুকু‘ ও সিজদার দু‘আর অর্থের পর লিখেছেনঃ “তিনি কুরআনের উপর ‘আমল করতঃ রুকূ‘ ও সিজদাতে এ দু‘আটি বেশি বেশি করে পড়তেন ।”(বুখারী হাদিস নং ৮১৭) আর এ সূরাটি নাযিল হয়েছে আল্লাহর রসূলের ইন্তিকালের অল্প কিছুদিন পূর্বে। সূরা নাসর হচ্ছে সর্বশেষ নাযিলকৃত সূরা। তাই উক্ত টীকার দাবী সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অজ্ঞতাপূর্ণ ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১২৪. অধ্যায়ঃ
রুকূ‘ হতে মাথা উঠানোর সময় ইমাম ও মুক্তাদী যা বলবেন ।
৭৯৫
حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَالَ ” سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ”. قَالَ ” اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ ”. وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَكَعَ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ يُكَبِّرُ، وَإِذَا قَامَ مِنَ السَّجْدَتَيْنِ قَالَ ” اللَّهُ أَكْبَرُ ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বলে (রুকূ’ থেকে উঠতেন) তখন ‘اللَّهُمَّ رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ’ বলতেন, আর তিনি যখন রুকূ’তে যেতেন এবং রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন, তখন তাক্বীর বলতেন এবং উভয় সিজ্দা থেকে যখন দাঁড়াতেন, তখন ‘اللَّهُ أَكبَر’ বলতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১২৫. অধ্যায়ঃ
‘আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হাম্দ’-এর ফযীলত ।
৭৯৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ سُمَىٍّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِذَا قَالَ الإِمَامُ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. فَقُولُوا اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ. فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ قَوْلُهُ قَوْلَ الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইমাম যখন ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বলেন, তখন তোমরা ‘اللَّهُمَّ رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ’ বলবে। কেননা, যার এ উক্তি ফেরেশতাগণের উক্তির সঙ্গে একই সময়ে উচ্চারিত হয়, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১২৬. অধ্যায়ঃ
১০/১২৬. অধ্যায়ঃ
৭৯৭
حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ لأُقَرِّبَنَّ صَلاَةَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. فَكَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ يَقْنُتُ فِي الرَّكْعَةِ الآخِرَةِ مِنْ صَلاَةِ الظُّهْرِ وَصَلاَةِ الْعِشَاءِ، وَصَلاَةِ الصُّبْحِ، بَعْدَ مَا يَقُولُ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. فَيَدْعُو لِلْمُؤْمِنِينَ وَيَلْعَنُ الْكُفَّارَ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি অবশ্যই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের ন্যায় সালাত আদায় করব। আবূ হুরায়রা (রাঃ) যুহর, ‘ইশা ও ফজরের সালাতের শেষ রাক‘আতেঃ ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বলার পর কুনূত পড়তেন। এতে তিনি মু’মিনগণের জন্য দু‘আ করতেন এবং কাফিরদের প্রতি অভিসম্পাত করতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৯৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي الأَسْوَدِ، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ الْقُنُوتُ فِي الْمَغْرِبِ وَالْفَجْرِ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময়ে) কুনূত ফজর ও মাগরিবের সালাতে পড়া হত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৯৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ نُعَيْمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْمُجْمِرِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ يَحْيَى بْنِ خَلاَّدٍ الزُّرَقِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ الزُّرَقِيِّ، قَالَ كُنَّا يَوْمًا نُصَلِّي وَرَاءَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرَّكْعَةِ قَالَ ” سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ”. قَالَ رَجُلٌ وَرَاءَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ، حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ، فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ ” مَنِ الْمُتَكَلِّمُ ”. قَالَ أَنَا. قَالَ ” رَأَيْتُ بِضْعَةً وَثَلاَثِينَ مَلَكًا يَبْتَدِرُونَهَا، أَيُّهُمْ يَكْتُبُهَا أَوَّلُ ”.
রিফা‘আ ইব্নু রাফি’ যুরাকী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠিয়ে ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বললেন, তখন পিছন থেকে এক সাহাবী ‘رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ حَمداً كَثيراً طَيِّباً مُبارَكاً فيِهِ’ বললেন। সালাত শেষ করে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কে এরূপ বলেছিল? সে সাহাবী বললেন, আমি। তখন তিনি বললেনঃ আমি দেখলাম ত্রিশ জনের অধিক মালাইকা এর সওয়াব কে পূর্বে লিখবেন তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছেন। [১]
[১] রুকূর পর পঠিতব্য দু‘আর মর্যাদার কারণে এর সওয়াব লেখার জন্য মালাকদের মধ্যেও প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। তাই রুকূ‘ হতে উঠে এই দু‘আটি পাঠ করা অধিক মর্যাদাপূর্ণ যা অনেকেই ইচ্ছাকৃতভাবে অনেকে না জানার কারণে পড়েন না ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১২৭. অধ্যায়ঃ
রুকূ‘ হতে মাথা উঠানোর পর স্থির হওয়া ।
আবূ হুমায়দ (রহঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে এমন সোজা হয়ে দাঁড়াতেন যে, মেরুদন্ডের হাড় যথাস্থানে ফিরে আসতো ।
৮০০
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ ثَابِتٍ، قَالَ كَانَ أَنَسٌ يَنْعَتُ لَنَا صَلاَةَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَكَانَ يُصَلِّي وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ قَامَ حَتَّى نَقُولَ قَدْ نَسِيَ.
সাবিত (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) আমাদেরকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের বর্ণনা দিলেন। অতঃপর তিনি সালাত আদায় করে দেখালেন। তিনি যখন রুকূ‘ হতে মাথা উঠালেন, তখন (এতক্ষণ) দাঁড়িয়ে রইলেন যে, আমরা মনে করলাম, তিনি (সিজদার কথা) ভুলে গেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮০১
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنِ الْبَرَاءِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ رُكُوعُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَسُجُودُهُ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ وَبَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ قَرِيبًا مِنَ السَّوَاءِ.
বারা‘আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রুকূ‘ ও সিজদা এবং তিনি যখন রুকূ‘ হতে মাথা উঠাতেন, এবং দু‘ সিজদার মধ্যবর্তী সময় সবই প্রায় সমান হত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮০২
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، قَالَ كَانَ مَالِكُ بْنُ الْحُوَيْرِثِ يُرِينَا كَيْفَ كَانَ صَلاَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَذَاكَ فِي غَيْرِ وَقْتِ صَلاَةٍ، فَقَامَ فَأَمْكَنَ الْقِيَامَ، ثُمَّ رَكَعَ فَأَمْكَنَ الرُّكُوعَ، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ فَأَنْصَتَ هُنَيَّةً، قَالَ فَصَلَّى بِنَا صَلاَةَ شَيْخِنَا هَذَا أَبِي بُرَيْدٍ. وَكَانَ أَبُو بُرَيْدٍ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السَّجْدَةِ الآخِرَةِ اسْتَوَى قَاعِدًا ثُمَّ نَهَضَ.
আবূ কিলাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মালিক ইব্নু হুওায়াইরিস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সালাত কেমন ছিল তা আমাদের দেখালেন। অতঃপর রুকূ’তে গেলেন এবং ধিরস্থিরভাবে রুকূ’ আদায় করলেন; অতঃপর তাঁর মাথা উঠালেন এবং কিছুক্ষণ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর তিনি আমাদের নিয়ে আমাদের এই শায়খ আবূ বুরাইদ (রহঃ)–এর ন্যায় সালাত আদায় করলেন। আর আবূ বুরাইদ (রহঃ) দ্বিতীয় সিজদা হতে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে বসতেন, অতঃপর দাঁড়াতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০/১২৮. অধ্যায়ঃ
সিজদায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলতে বলতে নত হওয়া ।
নাফি’(রহঃ) বলেন, ইব্নু ‘উমর (রাঃ) সিজদায় যাওয়ার সময় হাঁটু রাখার পূর্বে হাত রাখতেন । [১]
[১] এ সম্পর্কে যুগ শ্রেষ্ঠ আল্লামাহ ও মুহাদ্দিস নাসিরুদ্দিন আলবানীর সিফাতু সলাতুন্নাবী থেকে তাঁর উদ্ধৃতি পেশ করছি। তিনি উক্ত বিষয়ে শিরোনাম দিয়েছেনঃ হস্তদ্বয়ের উপর ভর করে সিজদায় গমন করা তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) মাটিতে হাঁটু রাখার পূর্বে হস্তদ্বয় রাখতেন। ইব্নু খুযাইমাহ (১/৭৬/১), দারাকুত্বনী, হাকিম এবং তিনি একে সহিহ বলেছেন ও যাহাবী তাতে ঐক্যমত্য পোষণ করেছেন। এর বিপরীতে যে হাদিস এসেছে তা সহিহ নয়। এই মত পোষণ করেছেন ইমাম মালিক। ইমাম আহমেদ থেকেও এমনটি এসেছে। ইব্নুল জাওযীর ‘আতত্বাহকীক’ গ্রন্থে (১০৮/২), মারওয়াযী স্বীয় ‘মাসায়িল’ গ্রন্থে (১/১৪৭/১) ইমাম আওযায়ী‘ থেকে সহিহ সানাদে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন আমি লোকজনকে হাঁটুর পূর্বে হাত রাখার উপর পেয়েছি । তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে বলতেনঃ তোমাদের কেউ যখন সিজদা করে তখন যেন উটের ন্যায় না বসে বরং সে যেন স্বীয় হাঁটুদ্বয়ের পূর্বে হস্তদ্বয় রাখে। আবূ দাউদ, তাম্মাম ‘আল ফাওয়াইদ’ গ্রন্থে (ক্বাফ ১০৮/১) সহীহ সানাদে নাসাঈ, ‘আসসুগরা’ ও ‘আল-কুবরা’ (৪৭/১ ফটোকপি) বাদশাহ আবদুল আজিজ ইউনিভার্সিটি, মক্কা) ‘আবদুল হক্ব আল-আহকামুল কুবরাতে (৫৪/১) একে সহিহ বলেছেন এবং “কিতাবুত্তাহাজ্জুদে” (৫৬/১) বলেছেনঃ এটি পূর্বের হাদিস অর্থাৎ তার বিরোধী ওয়াইল এর হাদিস অপেক্ষা উত্তম সনদ বিশিষ্ট বরং এটি যেমন (ওয়াইলের হাদিস) উপরোক্ত সহীহ হাদিস ও তার পূর্বের হাদিস বিরোধী ঠিক তদ্রূপ সানাদের দিক দিয়েও তা সহিহ নয় এবং এ অর্থে যে সব হাদিস এসেছে এগুলোও অনুরূপ। দেখুন আমার আলোচনা ‘আয্ যঈফাহ্’ (৯২৯) ও ‘আল ইরওয়া’ (৩৫৭)। জেনে রাখুন উটের হাঁটুর পূর্বে হাত রাখার বিষয়ে ব্যতিক্রম হওয়ার কারণ হচ্ছে এই যে, সে সর্ব প্রথম হাঁটু রাখে এবং তার হাঁটু হাতের মধ্যে হয়ে থাকে। দেখুন ‘লিসানুল আরব’ ও অন্যান্য অভিধান গ্রন্থ, ত্বাহাবি ‘মুশকিলুল আ-ছা-র’ ও ‘শারহু মা’য়ানিল আ-ছার’ গ্রন্থে এরূপ কথাই উল্লেখ করছেন। ইমাম ক্বাসিম সরক্বসত্বী রাহিমাহুল্লাহ-ও ‘গরীবুল হাদিছে’ (২/৭০/১-২) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে সহিহ সনদে বর্ণনা করেছেন যে, আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের কেউ পলাতক উটের ন্যায় যেন অবতরণ না করে ।” ইমাম ক্বাসিম বলেনঃ এটা সিজদার ব্যাপারে বলা হচ্ছে যে, পূর্ণ ধীরতা ও পরযায়ক্রমতা বজায় না রেখে বিচলিত উটের ন্যায় নিজেকে নিক্ষেপ না করে এবং ধীরস্থিরতার সাথে অবতরণ করে। প্রথমে হস্তদ্বয় রাখবে অতঃপর হাঁটুদ্বয় রাখবে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা সম্বলিত একটি হাদিছও বর্ণিত হয়েছে। অতঃপর উপরোল্লিখিত হাদীছ উল্লেখ করেন। ইব্নুল কাইয়িম এমন এক মন্তব্য করেছেনঃ যেটা বিবেক সম্মত নয় এবং ভাষাবিদগণও এই ব্যাখ্যার সাথে পরিচিত নন। কিন্তু আমি যেসব প্রমানপঞ্জির দিকে ইঙ্গিত করেছি তা এর প্রতিবাদ করে এবং এছাড়াও আরো অনেক প্রমাণপঞ্জি আছে । (দেখুনঃ নাসিরুদ্দিন আলবানি কৃত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর “ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি” বঙ্গানুবাদ ও সম্পাদনায়– আকরামুজ্জামান বিন আবদুস সালাম ও আবূ রাশাদ আজমল বিন আবদুন নূর)
৮০৩
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ، وَأَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، كَانَ يُكَبِّرُ فِي كُلِّ صَلاَةٍ مِنَ الْمَكْتُوبَةِ وَغَيْرِهَا فِي رَمَضَانَ وَغَيْرِهِ، فَيُكَبِّرُ حِينَ يَقُومُ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَرْكَعُ، ثُمَّ يَقُولُ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. ثُمَّ يَقُولُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ. قَبْلَ أَنْ يَسْجُدَ، ثُمَّ يَقُولُ اللَّهُ أَكْبَرُ. حِينَ يَهْوِي سَاجِدًا، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَسْجُدُ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ، ثُمَّ يُكَبِّرُ حِينَ يَقُومُ مِنَ الْجُلُوسِ فِي الاِثْنَتَيْنِ، وَيَفْعَلُ ذَلِكَ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ حَتَّى يَفْرُغَ مِنَ الصَّلاَةِ، ثُمَّ يَقُولُ حِينَ يَنْصَرِفُ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنِّي لأَقْرَبُكُمْ شَبَهًا بِصَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِنْ كَانَتْ هَذِهِ لَصَلاَتَهُ حَتَّى فَارَقَ الدُّنْيَا.
আবূ বকর ইব্নু ‘আবদুর রহমান (রহঃ) ও আবু সালামা ইব্নু ‘আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবু হুরায়রা (রাঃ) রমযান মাসের সালাত বা অন্য কোন সময়ের সালাত ফরয হোক বা অন্য কোন সালাত হোক, দাঁড়িয়ে শুরু করার সময় তাকবীর বলতেন, আবার রুকু‘তে যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন। তারপর (রুকূ’ থেকে উঠার সময়) ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বলতেন, সিজ্দায় যাওয়ার পূর্বে ‘رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ’ বলতেন। অতঃপর সিজদার জন্য অবনত হবার সময় আল্লাহু আকবর বলতেন। আবার সিজদা হতে মাথা উঠানোর সময় তাকবীর বলতেন। অতঃপর (দ্বিতীয়) সিজদায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন এবং সিজদা হতে মাথা উঠানোর সময় তাকবীর বলতেন। দু’ রাক’আত আদায় করে দাঁড়ানোর সময় আবার তাকবীর বলতেন। সালাত শেষ করা পর্যন্ত প্রতি রাক’আতে এরূপ করতেন। সালাত শেষে তিনি বলতেন, যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ! তোমাদের মধ্য হতে আমার সালাত আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সালাতের সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ। দুনিয়া হতে বিদায় নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সালাত এ রকমই ছিল।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮০৪
قَالاَ وَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ يَقُولُ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ. يَدْعُو لِرِجَالٍ فَيُسَمِّيهِمْ بِأَسْمَائِهِمْ فَيَقُولُ “ اللَّهُمَّ أَنْجِ الْوَلِيدَ بْنَ الْوَلِيدِ وَسَلَمَةَ بْنَ هِشَامٍ وَعَيَّاشَ بْنَ أَبِي رَبِيعَةَ، وَالْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ، اللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ، وَاجْعَلْهَا عَلَيْهِمْ سِنِينَ كَسِنِي يُوسُفَ ”. وَأَهْلُ الْمَشْرِقِ يَوْمَئِذٍ مِنْ مُضَرَ مُخَالِفُونَ لَهُ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন রুকূ’ হতে মাথা উঠাতেন তখন ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ ‘ বলতেন। আর কতিপয় লোকের নাম উল্লেখ করে তাঁদের জন্য দু’আ করতেন। দু’আয় তিনি বলতেন, হে আল্লাহ্! ওয়ালীদ ইব্নু ওয়ালীদ, সালামা ইব্নু হিশাম, আইয়্যাস ইব্নু আবু রাবী’আ (রাঃ) এবং অপরাপর দুর্বল মুসলিমদেরকে রক্ষা করুন। হে আল্লাহ্! মুদার গোত্রের উপর আপনার পাকড়াও কঠোর করুন, ইউসুফ (আঃ)–এর যুগে যেমন খাদ্য সংকট ছিল তাঁদের জন্যও তেমন খাদ্য সংকট সৃষ্টি করে দিন। (রাবী বলেন) এ যুগে পূর্বাঞ্চলের অধিবাসী মুদার গোত্রের লোকেরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর বিরোধী ছিল।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮০৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، غَيْرَ مَرَّةٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ سَقَطَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ فَرَسٍ ـ وَرُبَّمَا قَالَ سُفْيَانُ مِنْ فَرَسٍ ـ فَجُحِشَ شِقُّهُ الأَيْمَنُ، فَدَخَلْنَا عَلَيْهِ نَعُودُهُ، فَحَضَرَتِ الصَّلاَةُ، فَصَلَّى بِنَا قَاعِدًا وَقَعَدْنَا ـ وَقَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً صَلَّيْنَا قُعُودًا ـ فَلَمَّا قَضَى الصَّلاَةَ قَالَ “ إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا، وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. فَقُولُوا رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ. وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا ”. قَالَ سُفْيَانُ كَذَا جَاءَ بِهِ مَعْمَرٌ قُلْتُ نَعَمْ. قَالَ لَقَدْ حَفِظَ، كَذَا قَالَ الزُّهْرِيُّ وَلَكَ الْحَمْدُ. حَفِظْتُ مِنْ شِقِّهِ الأَيْمَنِ. فَلَمَّا خَرَجْنَا مِنْ عِنْدِ الزُّهْرِيِّ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ ـ وَأَنَا عِنْدَهُ ـ فَجُحِشَ سَاقُهُ الأَيْمَنُ.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোড়া হতে পড়ে যান। কোন কোন সময় সুফিয়ান (রহঃ) হাদীস বর্ণনা সময় ‘عَن فَرَس’ শব্দের স্থলে ‘مَن فَرَس’ শব্দ বলতেন। ফলে তাঁর ডান পাঁজর আহত হয়ে পড়ে। আমরা তাঁর শুশ্রুষা করার জন্য সেখানে গেলাম। এ সময় সালাতের ওয়াক্ত হলো। তিনি আমাদের নিয়ে বসে সালাত আদায় করলেন, আমরাও বসেই আদায় করলাম। সুফিয়ান (রহঃ) আর একবার বলেছেন, আমরা বসে সালাত আদায় করলাম। সালাতের পর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাঁকে ইকতিদা করার জন্য। তিনি যখন তাকবীর বলেন, তখন তোমরাও তাকবীর বলবে, তিনি যখন রুকু‘ করেন তখন তোমরাও রুকু‘ করবে। তিনি যখন রুকু‘ হতে উঠেন, তখন তোমরাও উঠবে, তিনি যখন ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه ‘ বলেন, তখন তোমরা ‘رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ’ বলবে। তিনি যখন সিজদা করেন, তখন তোমরাও সিজদা করবে। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, মা’মারও কি এরূপ বর্ণনা করেছেন? [‘আলী (রহঃ) বলেন] আমি বললাম হ্যাঁ। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, তিনি ঠিকই স্মরণ রেখেছেন, এরূপই যুহরী (রহঃ) ‘وَلَكَ الحَمدُ’ বর্ণনা করেছেন। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, (যুহরীর কাছ হতে) ডান পাঁজর জখম হওয়ার কথা মুখস্ত করেছিলাম। কিন্তু যখন তাঁর কাছ হতে বেরিয়ে আসলাম, তখন ইব্নু জুরায়জ (রহঃ) বললেন, আমিও তাঁর নিকট ছিলাম। (তিনি বলেছেন) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ডান পায়ের নল যখন হয়েছিল।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস