জান্নাত জাহান্নাম কোথায় অবস্থিত?

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে জান্নাত জাহান্নাম কোথায় অবস্থিত অর্থাৎ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্তমান অবস্থান।

জান্নাত ও জাহান্নাম বর্তমানে কোথায় অবস্থিত

সপ্তম আসমানের উপরে জান্নাত অবস্থিত, আর আল্লাহর আরশ হচ্ছে তার ছাদ; আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসুল স. বলেছেন, তোমরা আল্লাহ্‌র কাছে চাইলে ফেরদাউস চাইবে; কেননা এটাই হলো সবচেয়ে উত্তম ও সর্বোচ্চ জান্নাত। আমার মনে হয়, রাসূলুল্লাহ স. এও বলেছেন, এর উপরে রয়েছে আরশে রহমান; আর সেখান থেকে জান্নাতের নহরসমূহ প্রবাহিত হচ্ছে। মুহাম্মদ ইব্‌নু ফুলাইহ্ (রহঃ) তাঁর পিতার সূত্রে বলেন, এর উপরে রয়েছে আরশে রহমান।  — সহিহ বুখারি ২৭৯০।

সবাই একমত যে জান্নাত সাত আসমানের উপরে অবস্থিত। কিন্তু জাহান্নাম কোথায় অবস্থিত এ ব্যাপারে অনেক মতভেদ আছে। আজকে আমরা জানব যে আসলে জাহান্নাম কোথায় অবস্থিত।

রাসুল স. সম্রাট হিরাক্লিয়াসের নিকটে ইসলামের প্রতি আহবান করে পত্র প্রেরণ করার পর সে পত্রের জবাবে একটি পত্র প্রেরণ করে। তাতে সে একটি প্রশ্ন করেছিল আর তা হল, আপনি আমাকে এমন জান্নাতের প্রতি আহবান জানাচ্ছেন যার প্রশস্ততা ও পরিধি আসমান ও জমিন তূল্য; যা মুত্তাকীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে, তাহলে জাহান্নাম গেল কোথায়? এ প্রশ্ন শুনে রাসুল স. বললেন, সুবহানাল্লাহ, দিনের আগমন সুচিত হলে রাত কোথায় যায়? — আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া। ইমাম আহমাদ এটি বর্ণনা করেছেন।

রাসুল স. প্রশ্নের উত্তরে প্রশ্ন করলেন। এ দ্বারা তিনি কি বুঝালেন ? আমরা যদি একটু চিন্তাভাবনা করি তাহলে বুঝতে পারব ইনশাআল্লাহ। যখন আমাদের দেশে দিনের আগমন ঘটে তখন রাত আমাদের বিপরীত দেশে চলে যায়। আবার যখন আমাদের দেশে রাত আসে তখন দিন আমাদের বিপরীত দেশে চলে যায়। অর্থাৎ পৃথিবীর একদিকে যখন রাত অপরদিকে তখন দিন। আরও সহজভাবে যদি বলি , পৃথিবীর একদিক হল প্রাচ্য অপরদিক হল পাশ্চাত্য। প্রাচ্যে যখন রাত পাশ্চাত্যে তখন দিন আবার প্রাচ্যে যখন দিন পাশ্চাত্যে তখন রাত। রাসুল স. প্রশ্নের উত্তরে প্রশ্ন করলেন এটার অর্থ হচ্ছে, যেমন পৃথিবীর একদিকে রাত আর অপরদিকে দিন তেমন আসমানের একদিকে জান্নাত আর অপরদিকে জাহান্নাম। যেহেতু জান্নাত আসমানের উপরে সেহেতু জাহান্নামও আসমানের উপরে থাকাটা স্বাভাবিক বলে মনে হয় রাসুলে ঐ উক্তি থেকে।

কোরআনের এই দুটি আয়াতও জাহান্নাম আসমানের উপরে থাকার প্রমাণ বহন করে।

মহান আল্লাহ বলেন,উভয়ের মাঝখানে একটি প্রাচীর থাকবে এবং আরাফের উপরে অনেক লোক থাকবে; তারা প্রত্যেককে তার চিহ্ন দ্বারা চিনে নেবে। তারা জান্নাতীদেরকে ডেকে বলবে তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক; তারা তখনও জান্নাতে প্রবেশ করবে না, কিন্তু প্রবেশ করার ব্যাপারে আগ্রহী হবে; যখন তাদের দৃষ্টি জাহান্নামীদের উপর পড়বে, তখন বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে এ জালেমদের সাথী কর না। —সুরা আরাফ, আয়াত নং ৪৬, ৪৭। এ আয়াত থেকে বোঝা যাচ্ছে, জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝে একটি প্রাচীর আছে এবং তার উপর একটি উচু জায়গা আছে যার নাম আরাফ; সেখানে অনেক লোক থাকবে যারা জান্নাতী ও জাহান্নামীদের দেখতে পাবে; এর অর্থ হচ্ছে জান্নাত ও জাহান্নাম পাশাপাশি অবস্থান করে। অর্থাৎ উভয়ই আসমানের উপরে অবস্থিত।

রাসুল স. মিরাজের রাত্রে আসমানের উপরে জান্নাত ও জাহান্নাম দেখে এসেছেন।

অতএব সঠিক কথা হল এই যে, জান্নাত ও জাহান্নাম উভয়ই আসমানের উপরে অবস্থিত। একদিকে জান্নাত ও অপরদিকে জাহান্নাম।

Share the Post

Rate the Post

Rating Summary

0.0
0.0 out of 5 stars (based on 0 reviews)
Excellent0%
Very good0%
Average0%
Poor0%
Terrible0%

Latest Reviews

There are no reviews yet. Be the first one to write one.

Latest Book

Scroll to Top